হামাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। দেশটির ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ হামলায় ৬ শতাধিক ইসরায়েলি নিহত হওয়ার ঘটনায় মরিয়া বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। শনিবার দেশটিতে অতর্কিত হামলার পর গাজা ও পশ্চিম তীরে বোমাবর্ষণ করেছে বৃষ্টির মতো। তারপরও মিটছে না মনের ঝাল।
এবার মিত্র ইসরায়েলের সহায়তায় দেশটির পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, তার দেশ ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন দেখাতে একাধিক যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাস, সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক যেন স্বাভাবিক হওয়া ঠেকানো যায়, এজন্যই এই হামলা চালিয়েছে হামাস।
শনিবার ইসরায়েলের ভেতর ঢুকে রীতমতো তাণ্ডব চালায় হামাসের যোদ্ধারা। কয়েক দশকের মধ্যে এমন রক্তক্ষয়ী শনিবার আর দেখেনি ইসরায়েল। এরপর রোববার বৃষ্টির মতো গাজায় বোমাবর্ষণ করে দেশটির সেনাবাহিনী। টানা তিন দিন ধরে চলমান এই সংঘাতে এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রোববার সিএনএন জানায়, নিহতদের মধ্যে তিনজন মার্কিনিও রয়েছে।
ঘটনার আকস্মিকতায় হকচিয়ে যাওয়া ইসরায়েলের পাশে দাঁড়াতে বিন্দুমাত্রও সময় ব্যয় করেনি যুক্তরাষ্ট্র। সেটিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এক বিবৃতিতে অস্টিন জানান, ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপকে তিনি পূর্বাঞ্চলীয় ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের কাছাকাছি যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে ওই ক্যারিয়ার, একটি গাইডেড মিসাইল ক্রুজার এবং চারটি গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার।
তবে শুধু জলে নয়, অন্তরীক্ষ থেকেও ইসরায়েলের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্টিন জানান, ওয়াশিংটন এই অঞ্চলে মার্কিন বিমান বাহিনীর এফ-থার্টিফাইভ, এফ-ফিফটিন, এফ-সিক্সটিন ও এ-টেন যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রন বাড়ানোর জন্যও পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে অস্ত্রও দেবে।
এর আগে রোববার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি নেতানিয়াহুকে জানান, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য অতিরিক্ত সহায়তা পৌঁছাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সামনের দিনগুলোতে এই সহায়তার পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে বলেও জানানো হয়। এদিকে বাইডেনের মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ইসরায়েলি প্রেসিডন্টে আইজ্যাক হারজগের সঙ্গে ফোনালাপ করেন।
নজিরবিহীন এই হামলার ঘটনার মধ্যেই খোদ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের টাইমস স্কয়ার এবং ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের কাছে বিক্ষোভ হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ওই বিক্ষোভে ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিরোধিতা করা হয়। তবে এমন প্রতিবাদের সমালোচনা করেছেন নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল। তিনি বলেন, বিক্ষোভকারীরা নৈতিকতা বিসর্জন দিয়েছে।