হুমায়ূন আহমেদ শুধু বাংলা ভাষা-সাহিত্যকে ঋদ্ধই করেননি বরং মানুষকে করেছিলেন বইমুখি। তাঁর জন্ম না হলে সব্যসাচী বিরলপ্রজ প্রতিভা পেত না বাঙালি। শব্দের এই জাদুকর বাঙলা ও বাঙালিকে অকাতরে দিয়েছেন শিল্প-সুষমা। জনপ্রিয় এই কথাশিল্পীর ৭৫তম জন্মদিন আজ। মৃত্যুর পর পেরিয়ে গেলো ১১ বছর। এখনও তুমুল জনপ্রিয় হুমায়ূন আহমেদ। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পাঠক হচ্ছেন হুমায়ূনমুখি, পড়ছেন তাঁর বই।
হুমায়ূন জন্ম না নিলে কী ক্ষতি হতো! না বলে বরং কি পেত না বাঙলা সাহিত্য তাই-ই মূখ্য। তাঁর সুতিক্ষ্ণ চিন্তা, লেখনির ধরণ ও স্বকীয়তা এই বাংলার গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে গেছে অনেক দেশে। অনবদ্য-কালজয়ী চরিত্রের বিরল স্রষ্টা হুমায়ূন শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়। টেলিভিশনের পর্দায় তিনি পরিণত এবং শয়ম্ভু। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়, নতুন রাষ্ট্রের জন্ম আর তার প্রেক্ষাপট মিলে হুমায়ূন তৈরি করেছেন ভিন্ন আঙ্গিকের গল্প। এমন বহুমাত্রিক কারণেই প্রতিবারের বইমেলা হয়ে ওঠে হুমায়ূনময়।
প্রচ্ছদশিল্পী, পাঠক-প্রকাশকদের মধ্যমণি এখনও হুমায়ূন আহমেদ। সংস্কৃতিবানদের কাছে তাই তিনি সর্ব ঘটের জল। প্রয়াণের প্রায় একযুগ হতে চললেও হুমায়ূন আহমেদ এখনও অবিকল, বহুলপ্রজ এবং অনবদ্য এক নাম। দেশ বরেণ্য লেখক হুমায়ূন আহমেদ মায়ের বড় সন্তান হিসেবে নানার বাড়ি জেলার মোহনগঞ্জের পৌর এলাকার শেখ বাড়িতে ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১২ সালের ১৯ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমেরিকায় মারা যান।
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পদক ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন।