দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তৃনমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার। শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ-১ আসন রূপগঞ্জে নির্বাচন প্রচারণা শুরু করার আগে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এরকম অনেক কিছু থেকে আমাকে সরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। গতকাল তৃণমূল বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে করা সংবাদ সম্মেলন নিয়ে তৈমুর বলেন, যারা সংবাদ সম্মেলন করে নানা অভিযোগ করেছে তারা এ দলের কেউ না। আসল কথা হলো নির্বাচন বানচাল করতে ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তৈমূর বলেন, অভিযোগ যারা করেছে ব্যানারে যাদের নাম দেখলাম, প্রধান অতিথি হিসাবে এবং সভাপতি হিসেবে তাদের কাউকে দেখলাম না। আর নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হয়েছে। আমাকে পর্যন্ত অফার দেওয়া হয়েছে নির্বাচন থেকে সড়ে আসার জন্য যেকোনো কিছুর বিনিময়ে। আমি বলেছি, জীবনের বিনিময়ে হলেও আমি যেটা কথা দিয়েছি তার বাইরে যাব না।
তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, যারা সাংবাদিক সম্মেলন করেছে তারা তৃণমূল বিএনপির সদস্য না। তৃণমূল বিএনপির কমিটিতে নেই। আর যাদের নাম প্রধান অতিথি এবং সভাপতির নামে দেখেছি তাদের কাউকে সেখানে দেখিনি।
তবে এই ৬০ জন হয়তো শরিক দল থেকে এসেছে। আর আমাকে যেহেতু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সেখানে তাদের বেলায়তো প্রস্তাব থাকতেই পারে।
তবে এটাও সত্য আমরা আমাদের প্রার্থীদের সেরকম ফান্ড দিতে পারিনি। আমরা আমাদের ক্যাপাসিটি অনুযায়ী প্রার্থীদের ফান্ড দিতে পরিনি। আওয়ামী লীগ যেমনটা করতে পারে আমরা সেরকম করতে পারিনি। নির্বাচন বানচাল করার জন্য নানা রকমের ষড়যন্ত্র চলছে। কেউ কোনো রকমে বায়েস্ট হয়ে এটা করতে পারে। নানা ধরনের ষড়যন্ত্র এখনও চলছে যাতে বাংলাদেশে নির্বাচন না হয়। ১৪২ জনের মধ্যে মাত্র ৭ জন এটা করেছে।
তাছাড়া ওই সংবাদ সম্মেলনের প্রধান অতিথি জাহাঙ্গীর মাজমাদার (তৃণমূল বিএনপির কো-চেয়ারপারসন) ও মেজর (অব.) ডা. শেখ হাবিবুর রহমান খানের (ভাইস চেয়ারপারসন) উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেন।
আলোচনা সভায় তৃণমূল বিএনপির কো-চেয়ারপারসন কেএ জাহাঙ্গীর মাজমাদার প্রধান অতিথি ও ভাইস চেয়ারপারসন মেজর (অব.) ডা. শেখ হাবিবুর রহমান খান সভাপতিত্ব করার কথা থাকলেও তারাও পালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন প্রার্থীরা।
রূপগঞ্জের মানুষ তাদের মনের কাঙ্ক্ষিত প্রার্থী খুঁজে পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, রূপগঞ্জের মানুষ তাদের মনের কাঙ্ক্ষিত প্রার্থী খুঁজে পেয়েছে। এতোদিন মানুষ মুখ খুলতে পারে নাই। এই রূপগঞ্জ শাসক দলের অধীনে ছিল। রূপগঞ্জের ব্যাবসা বাণিজ্য ও নদী, খাল দখল সবই তাদের অধীনে ছিল। এখানে দলমত নির্বিশেষে সবাই নির্যাতিত। এই নির্যাতিত ব্যক্তিগুলো এখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। মানুষ এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে।
আমি লক্ষ্য করেছি, আমি আগে যেখানে গেলে ৫০-১০০ জন মানুষ হতো এখন শত শত মানুষ সেখানে জড়ো হয়। এর মধ্যে কয়েকটা শ্রেণি আছে যারা মনে করে আমি তদের চাকরি দিয়ে জেল খেটেছি।
রূপগঞ্জ থেকে মাদক নির্মূল করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, রূপগঞ্জের ভেতরে মাদকের পয়সা বেশি। এখানে যে মাদকের ডিলার ছিল সেই বজলুর মেম্বারকে দেখা গিয়েছে মন্ত্রী এমপিদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে। আমি ঘোষণা দিয়েছি, আল্লাহ যদি আমাকে রূপগঞ্জের গোলামির জন্য কবুল করে তাহলে থানার ওসি এবং মাদক একসঙ্গে থাকবে না। হয় ওসি থাকবে নয় মাদক থাকবে।
প্রত্যেকটা অটোরিকশা থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। ফুটপাতে চাঁদাবাজি নিয়ে ভুলতাতে খুন হয়েছে। গত ১৫ বছরে রূপগঞ্জে অনেকগুলো খুন হয়েছে। আমাকে আল্লাহ যদি কবুল করে রূপগঞ্জের রাজনীতিতে কোনো খুনাখুনি হবে না। আমি সকলের জন্য নিরাপদ।