সরকারের সকল ‘হুমকি-ধামকি’ উপেক্ষা করে জনগণের প্রতি ‘সার্বজনীন ভোট বর্জনে’র ডাক দিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি।
এসময় দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।
মঈন খান বলেন, আমরা আজ গণতন্ত্রকামী মানুষের প্রতি এই আহ্বান জানাবো, আপনারা এই জনপ্রিতিনিধিত্ববিহীন বর্তমান যে সরকার সেই সরকারের কোনও হুমকি-ধমকি অথবা তাদের কোনও ভয়-ভীতিতে চিন্তিত হবেন না। আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে সেই সরকারের প্রদত্ত ভয়ভীতির মোকাবিলা করুন, যে বা যারা আপনাকে ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করতে চায় তাদের চিহ্নিত করুন।
তিনি আরও বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানাতে চাই— ভাতা কার্ড জব্দ করে কিংবা ভাতা বন্ধ করে কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করে কোনও অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত হবেন বা হচ্ছেন; ভবিষ্যতে তাদের আইনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে’, যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আপনারা দেখেছেন, আজ থেকে অল্প কয়েক মাস আগে এক উপনির্বাচনে ৫৩ সেকেন্ডে ৪৭টি ভুয়া ভোটের সিল মারা হয়েছিল। বিএনপির পক্ষ থেকে আজ আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করার হুমকি, ভাতা কার্ডধারী অসহায় মানুষের জীবনজীবিকাকে হুমকিতে ফেলা কিংবা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পোস্টাল ভোট অথবা অন্য কোনও ভূমিকায় তাদের অবতীর্ণ করিয়ে নির্বাচনে প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এর প্রত্যেকটি আইনগত অপরাধ।
তিনি বলেন, যারা আমাদের দরিদ্র ট্যাক্সপেয়ারের যে অবদান সেই অবদান থেকে রাষ্ট্রীয় ভাতা ও বেতন পাচ্ছেন তারা দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্র থেকে এই সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। এটা দল ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোনও অনুদান নয়। অতএব ভাতা কার্ডের বিনিময়ে বাংলাদেশের কোনও নাগরিককে ভোট দিতে বাধ্য করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
বিএনপির একটি উদারনৈতিক শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দল উল্লেখ করে আবদুল মঈন খান বলেন, বিএনপিকে নিয়ে অনেক গল্প সরকার সাজিয়েছে, অনেক মিথ্যা ঘটনা তারা সৃষ্টি করে তার দায়-দায়িত্ব বিএনপির ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছে। আমরা জানি অতীতে হয়তো এমন একটি বিশ্ব পরিবেশ-পরিস্থিতি ছিল… আপনারা জানেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আফগানিস্তানের একটি চিত্র ছিল, তখন হয়তো সরকারের এই সব গাল-গল্প অনেককে মিথ্যাভাবে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু আজকের পৃথিবী আলাদা। আজকে সরকার নতুন করে যদি সেই ২০১৪ এর ফর্মুলা অ্যাপ্লাই করে, বিএনপি এই শান্তিপূর্ণ উদারনৈতিক দলের কোনও মিথ্যা ভাবমূর্তি দেশে বা বিদেশে প্রচার করতে চায় বা চাইছে, কিন্তু তাদের সেই প্রচেষ্টা ইতিমধ্যে ব্যর্থ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, সরকার ভাবছে ৭ জানুয়ারি তাদের জয়লাভের দিন। আমি বলবো, ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের পরাজয়ের দিন। কারণ সেদিন তারা বাংলাদেশের নতুন করে অপমৃত্যু ঘটাবে।