২০২৩ সালে সারাদেশে মোট ৬ হাজার ৯১১টি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৬ হাজার ৫২৪ জন এবং ১১ হাজার ৪০৭ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সংস্থাটি রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১১২৮ জন শিশু, যা মোট নিহতের ১৭ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ৯৭৪ জন নারী, যা মোট নিহতের ১৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
সংস্থাটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থার নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় বাড়লেও কমেছে মৃত্যুর সংখ্যা। দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যুর সংখ্যাও আগের বছরের তুলনায় সামান্য কমেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় সারাদেশে ১ হাজার ১২৮ শিশু নিহত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন সড়কে তিনজনের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গত বছর দেশের আঞ্চলিক সড়কগুলোতে সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের সময়, বসতবাড়ির আশপাশের সড়কে খেলাধূলার সময় নিহতের ঘটনা বেশি ঘটেছে।
দেখা গেছে, ৪০ শতাংশের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে যাত্রী বা পণ্যবাহী বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কারের ধাক্কায়। এরপর আঞ্চলিক বা গ্রামীণ সড়কের গাড়ি, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ১৬ শতাংশ শিশুর প্রাণ গেছে বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায়। স্থানীয়ভাবে তৈরি নছিমন, ভটভটি বা মাহিন্দ্র কেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ শিশুর প্রাণ।
রোড সেফটির প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর শিশু মৃত্যু গ্রামীণ সড়কের তুলনায় আঞ্চলিক সড়কে বেড়েছে। দুর্ঘটনায় নিহত শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৩ শতাংশেরই বয়স ৬-১২ বছরের মধ্যে। এরপরই আছে ১৩-১৮ বছর বয়সের শিশু। নিহত শিশুদের মধ্যে ৩৭ শতাংশই এই বয়সের।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৩ সালে ২ হাজার ৫৩২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৪৮৭ জন নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ১২ শতাংশ।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১ হাজার ৯৬৭টি দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৬৯৪ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩৪৭টি দুর্ঘটনায় ৩৮৮ জন নিহত হয়েছে। এই সময়ে ১০৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৪৮ জন নিহত, ৭২ জন আহত এবং ৪৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২৮৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩১৮ জন নিহত এবং ২৯৬ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ২৯৭৩ দুর্ঘটনায় ৩০৯১ জন নিহত হয়। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ১.২ শতাংশ, প্রাণহানি কমেছে ১৫.৪১ শতাংশ।