ইন্দোনেশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে বিপুল ভোটে এগিয়ে থাকা প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো জয় দাবি করেছেন। এখন পর্যন্ত গণনাকৃত ভোটের ৫৮ শতাংশেরও বেশি জিতে নিয়েছেন তিনি। খবর বিবিসির। ৭২ বছর বয়সী এই জেনারেল এর আগেও দুই বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন।
ইন্দোনেশিয়ার নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পান, তাহলে তাকে আর রান-অফে লড়তে হয় না। সুবিয়ান্তো যে পরিমাণ ভোট পেয়েছেন তাতে তিনি একবারেই প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন। তবে সুবিয়ান্তো নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করলেও সমর্থকদের আরও ধৈর্য ধরতে হবে।
১৯৯৮ সালে সুহার্তোর একনায়কত্বের অবসানের পর দেশটিতে পঞ্চমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনে প্রায় ২০ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ভোট দেওয়ার যোগ্য।
ভোট উপলক্ষে ২৮ কোটি জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৮ লাখের বেশি কেন্দ্রে আজ ভোট নেওয়া হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে ৫৭ লাখের বেশি ব্যক্তি নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, দেশটির ভোটাররা প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি ভাইস প্রেসিডেন্ট, ৫৮০ জন পার্লামেন্ট সদস্য, ২০ হাজারের বেশি আঞ্চলিক আইনপ্রণেতাও নির্বাচন করবেন। এসব নির্বাচনে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার প্রার্থী লড়ছেন।
এদিকে রাজধানী জাকার্তায় সমবেত সাংবাদিকদের প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো বলেন, এই জয় সব ইন্দোনেশিয়র জয়। ইন্দোনেশিয়ায় গণতন্ত্র ভাল যাচ্ছে। মানুষ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্পদশালী এই সাবেক সামরিক জেনারেল সুবিয়ান্তোর সঙ্গে বর্তমান সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। তার মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে উদ্বেগ আছে। এ কারণে, তিনি একজন বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। এক প্রজন্ম আগে সুহার্তোর স্বৈরশাসনের সময় সামরিক বাহিনীর প্রধান কমান্ডার ছিলেন সুবিয়ান্তো।
ওই সময়ে তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৯০ এর দশকে এক পর্যায়ে তার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
১৯৯৮ সালে ২০ জনের বেশি গণতান্ত্রিক আন্দোলনকর্মী শিক্ষার্থী (যাদের মধ্যে ১৩ জনের কোনও হদিস পাওয়া যায়নি) অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার কারণে তাকে অসম্মানজনকভাবে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
ফলে সুবিয়ান্তোর আগমনে ইন্দোনেশিয়া আবারও অতীতের একনায়কত্বে ফিরে যাওয়ার বিপদের ঝুঁকিতে পড়ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।