পথে প্রান্তরে রিপোর্ট: টাঙ্গাইল পৌর এলাকায় ২ দশমিক ৭ একর জায়গার ‘পদ্মমনি পুকুর’ নিয়ে পৌরসভার সঙ্গে মালিকানা দাবিদারের বিরোধ দীর্ঘকালের। বিষয়টি এখন হাইকোর্টে এসেছে। হাইকোর্ট দুই পক্ষকের জন্যই স্থিতিঅবস্থা জারি করেছে। ফলে কোন পক্ষই পুকুরটি ভোগদখল করতে পারবেন না। কিন্তু টাঙ্গাইল পৌরসভা নিষেধজ্ঞা না মেনে পুকুরটি পৌরসভা মেয়রের পিএসকে লিজ দিয়েছে ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর । অবৈধভাবে লিজ গ্রহণকারী প্রতিনিয়তই পুকুরটি থেকে মাছ ধরে নিচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন মৃত মির্জা জায়নুল আবেদীন ওয়ারিশ মির্জা আওলাদ হোসেন। পৌর মেয়র সিরাজুল হক আলমগীর ‘পথে প্রান্তরে’কে জানান, জর্জকোর্টে পদ্মমনি পুকুরটি পৌরসভার নামে রায় দিয়েছে। যারা পুকুরটি দাবী করছে তাদের দাবী গ্রহণযোগ্য নয়। দীর্ঘদিন ধরেই পুকুরটি নিয়ে মামলা চলে আসছে। সর্বশেষ টাঙ্গাইল পৌরসভা কোর্টের মাধ্যমে পুকুরটির মালিকানা পেয়েছে।
এদিকে মালিকানা দাবী করে টাঙ্গাইলের ডিসির কাছে মির্জা আওলাদ হোসেন গংরা একটি আবেদন দায়ের করেছে। কিন্তু ডিসি কোন সিন্ধান্ত না দেয়ায় বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে।আওলাদ হোসেন জানান, নিম্ন তপশীল বর্ণিত ২দশমিক ৭ (দুই একর সাত শতাংশ) ভূমি আমাদের জোত ভূমি থানা ও মালিকানা স্বত্ব থাকা ও দখল অবস্থায় নিঃস্বত্ববান ও দখলবিহীন আমাদের প্রতিবেশী শত্রুতা বশতঃ মৃত আঃ করিম খানের পুত্র জাহিদ হোসেন খান গং বাদী হইয়া তপশীল বর্ণিত ভূমি সম্পর্কে টাঙ্গাইলের সাব জজ আদালতে ১৯৮০ সালের ৩২২ নং ইজমেন্ট রাইটের মোকদ্দমা দায়ের করেন। একই ভূমি সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিঃস্বত্ববান ও দখলবিহীন টাঙ্গাইল পৌরসভা বাদী হইয়া টাঙ্গাইলের যুগ্ন জেলা জজ আদালতে ১৯৮১ সনের ১০নং অন্য প্রকার শ্রেণীর মোকদ্দমা দায়ের করেন। উভয় মোকদ্দমা পাশাপাশি বিচারের জন্য টাঙ্গাইলের যুগ্ন জেলা জজ ২য় আদালতে বদলী হয়ে আসে। টাঙ্গাইলের যুগ্ন জেলা জজ ২য় আদালতে বদলী হয়ে ইজমেন্ট রাইটের মোকদ্দমা ২১/১৪ নং এবং টাঙ্গাইল পৌরসভা দায়েরকৃত মোকদ্দমাটি ২২/১৪নং মোকদ্দমা রূপে জমা হয়। উভয় মোকদ্দমা বিচারাধীন অবস্থায় আছে। এমতাবস্থায় সম্পূর্ণ নিঃস্বত্ববান ও দখলবিহীন টাঙ্গাইল পৌরসভার বর্তমান মেয়র সাহেব অন্যায় ও বেআইনীভাবে প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে দরখাস্তকারীপক্ষকে ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদান করে আসিতেছে। এমনকি পৌরসভা হইতে নালিশী ভূমির আকার ও আকৃতির রূপান্তর করে নালিশী ভূমিতে মাটি ভরাট করে পাকা দালান কোঠা ও দোকান পাট নির্মাণ করার জন্য চেষ্টায় লিপ্তি আছে। আদালতের দেয়া স্থিতিঅবস্থায় ভূমির কোন আকার পরিবর্তন করা যাবে না।
আওলাদ বলেন, আমরা জর্জকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে পদ্মমনি পুকুর নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করি। মামলায় হাইকোর্ট দুই পক্ষকেই পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থিতিঅবস্থায় জারি করেছেন। কিন্তু পৌরসভা হাইকোর্টে এই নির্দে না মেনে গায়ের জোরে মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকায় পুকুরটি লিজ দিয়েছে।
এ বিষয়টি টাঙ্গাইল পৌরসভা মেয়রের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যা করা হয়েছে তা আইন মেনেই করা হয়েছে। যেহেতু পুকুরটি পৌরসভার। তাই পুকুরের বিষয়ে সিন্ধান্ত পৌরসভাই নিবে।