তুরাগ তীরে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, মাঠ ছাড়ার নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ তীরে সকল প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উভয়পক্ষকে মাঠ ছাড়ার নির্দেশে দিয়েছে সরকার।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) তাবলিগের দুই পক্ষের হতাহতের ঘটনায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়। পরে দুপুরে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতদারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায়‌ জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে বুধবার দুপুর ২টা থেকে কামারপাড়া, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা সেক্টর-১০ এবং তৎসংলগ্ন তুরাগ নদের দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় যেকোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ ইত্যাদি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হলো।

পুলিশ জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে। ধর্মীয় স্বার্থে কোনো পক্ষকে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।

সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর সাদ অনুসারী মাওলানা রেজা আরিফ মাঠ ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে যে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। এ পরিস্থিতি এড়াতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা ও সংঘর্ষ রোধে সরকারের অনুরোধকে সম্মান জানিয়ে মাঠ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

রেজা আরিফ আরও বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরকার মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিজ দায়িত্বে নেবে। কোনো পক্ষই মাঠে অবস্থান করবে না। উভয়পক্ষের প্রতি অনুরোধ, যেন কেউ সংঘর্ষে না জড়ায়।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে মাঠ দখল নিয়ে মাওলানা সাদ ও জুবায়েরপন্থী অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন নিহত হন। এতে শতাধিক আহতের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন অন্তর্বর্তী সরকারের পাঁচ উপদেষ্টা। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক হয়।

সাদপন্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষ হওয়ার পর জোবায়েরপন্থীদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন উপদেষ্টারা। সে বৈঠক এখন চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব ইজতেমার আগে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জোড় ইজতেমা করার জন্য সাদ অনুসারী মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। আর সাদপন্থীরা যেন ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে না পারেন, সেজন্য আগে থেকেই ময়দানে অবস্থান করছিলেন জুবায়েরপন্থীরা।

এ নিয়েই উভয়পন্থীদের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যে মধ্যরাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

সর্বশেষঃ