কৃষি ডেস্ক: বন্যায় আমন ধানের চারা নষ্ট হয়ে গেলেও প্রযুক্তির সাহায্যে সেই ক্ষতি কিছুটা হলেও পোষানো সম্ভব। এমনই উদ্যোগ নিয়ে কৃষকদের জন্য কাজ করছে এসিআই মোটর্স। সংশ্লিষ্টদের দাবি, স্বয়ংক্রিয় বীজ বপন যন্ত্র ও ট্রান্সপ্লান্টারের সাহায্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবার ধানের চারা জমিতে রোপণ করতে পারবেন কৃষক।
উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে হওয়া ভয়াবহ বন্যায় ডুবে যায় দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ১২ টি জেলা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২ লাখ হেক্টরের অধিক ফসলী জমি। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমনের বীজতলা আর খেত। কিন্তু জমিতে পানি থাকায় নতুন করে বীজতলা করাটা হয়েছে প্রায় অসম্ভব।
তবে কৃষকদের অসামান্য ক্ষতি পোষতে অন্ধের যষ্টি হতে পারে স্বয়ংক্রিয় বীজ বপন যন্ত্র। কেননা এই যন্ত্রের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেতে দেয়া হয় বীজ। যা মাত্র ১২ থেকে ১৫ দিনে হয় পরিণত হয় রোপণ উপযোগী চারায়।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, এই যন্ত্রের সহায়তা নিলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া সময় আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমিতে নাভীজাতের আমনের চারা রোপণ করা সম্ভব।
তারা আরও বলছেন, এই সংকটে ট্রেতে গজানো চারা সহজেই রোপণ করা যায় ট্রান্সপ্লান্টারে। কেননা ১৫ জন শ্রমিকের সারাদিনের কাজ একঘণ্টায় করে ট্রান্সপ্লান্টার। ফলে দিনে ১২ একর জমিতে চারা লাগালে মৌসুমের মধ্যেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলো পুনরায় আমনের খেতে ভরে উঠানো সম্ভব।
এসিআই মোটর্স লিমিটেডের সিনিয়র প্রোডাক্ট এক্সিকিউটিভ মো. আশিকুর রহমান বলেন, ফারমাররা অনেক সময় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ সময় সাশ্রয় করছে। ৭০ ভাগের ওপর শ্রমিক কম লাগছে। এছাড়া খরচও অর্ধেকে নেমে গেছে। ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ করায় সেটি ৫ থেকে ৭ দিন আগেই পরিপক্ব হয়ে যায়। এর মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ ভাগ ফলনও বেশি আসবে।
তিনশ উপজেলায় এমন ৩ শতাধিক ট্রান্সপ্লান্টার রয়েছে এসিআই মোটর্সের। এছাড়া বন্যা দুর্গত এলাকা ফেনীতে দশ হাজার চারার ট্রে কৃষকদের ফ্রিতে রোপণ করে দেয়ার কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
মো. আশিকুর রহমান আরও বলেন, এখানে সাধারণত প্রস্তুতকৃত মাটি দিতে হয়। একটাতে সিট দিতে হয়। পানির সংযোগ দেয়া থাকে। ফারমাররা যেহেতু এই মেশিনগুলো সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে কিনতে পারছে এর ফলে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হওয়ারও সুযোগ আছে।
সরকারের ৭০ শতাংশ ভর্তুকি থাকায় একজন কৃষক মাত্র ৩০ শতাংশ দামে সহজেই কিনতে পারবে এই ট্রান্টপ্লান্টার।