স্টাফ রিপোর্টার- সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের ১ নং কূপের খনন কাজ আবার শুরু করেছে। ১ নং কূপ থেকে দৈনিক প্রায় সাত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করার আশা সংশ্লিষ্টজনদের। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় উদ্বোধনের পর কূপের খননকাজ শুরু করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)।
সিলেট গ্যাসফিল্ডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান জানান, ‘বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের এক নম্বর কূপ থেকে নতুন করে গ্যাস তোলার জন্য পুনঃখনন শুরু হয়েছে। খননের পর কূপটিতে গ্যাস জ্বালিয়ে পরীক্ষা করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ধারণা করা হচ্ছে, দৈনিক প্রায় ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব। পাশাপাশি দৈনিক প্রায় ৯৫ ব্যারেল জ্বালানি তেল উৎপাদনের কনডেনসেট পাওয়া যেতে পারে। এ বছরের নভেম্বর বা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে খননকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’ তবে খননকাজ শেষ হলে উত্তোলনের সঠিক পরিমাণ নিরুপন করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস ও শেভরন থেকে উৎপাদিত গ্যাসের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রায় চার হাজার ২০০ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদিত হয়। সেগুলো থেকে প্রতিদিন প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে তিন হাজার ৮০০ ব্যারেল জ্বালানি পাওয়া যায়।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মিলে। এরপর আবিষ্কৃত হয়েছে আরও বেশ ক’টি গ্যাসক্ষেত্র। দেশে বর্তমানে ২৮ টি আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড (এসজিএফএলের) আওতায় বর্তমানে পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডস রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাসটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। তন্মধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। বাকিগুলোর ১২টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৯১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের আওতাধীন বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রে দুটি কূপ আছে।
এর মধ্যে এক নম্বর কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। আবার ২০১৬ সালের শুরুর দিকে উৎপাদন শুরু হয়ে ওই বছরের শেষের দিকে বন্ধ হয়ে যায়। তখন কূপের তিন হাজার ৪৫০ মিটার থেকে গ্যাস উৎপাদন করা হতো। পুনঃখননকাজের মাধ্যমে তিন হাজার ২০০ মিটার গ্যাস উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে। এ জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে গ্যাসক্ষেত্রের দুই নম্বর কূপ থেকে প্রতিদিন সাত থেকে সাড়ে সাত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। জ¦ালানি সংকট নিরসনে সরকার সবরকম চেষ্ঠাই চালিয়ে যাচ্ছে। শীঘ্রই এ সংকট নিরসন হবে বলে কর্তৃপক্ষের আশা।