রাজধানীর শাহজাহানপুর গুলবাগে যুবলীগ নেতা অলিউল্লাহ রুবেলকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার (২২ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি মতিঝিল বিভাগ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- হাবিব আহসান (২২), আলিফ হোসাইন (২১), রবিউল সানি (২১), মেহেদী হাসান (১৯), মো. শাহজালাল (৩৭), রফিকুল ইসলাম (৩৮), নুর আলম (৪২) ও সুমন মীর (২৮)।
ডিবি জানায়, স্থানীয় এলাকার আধিপত্য বিস্তার করে যুবলীগ নেতা অলিউল্লাহ রুবেলকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হাবিব ও শাহজালাল নামে দুই ব্যক্তি এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। স্থানীয় এলাকার বাজার ও ফুটপাতের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে শাহজালালের সঙ্গে আধিপত্য কেন্দ্রিক বিস্তারের বিরোধ হয় রুবেলের।
রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী শাহজালাল ও নিবির নামে দুই ব্যক্তি। দু’জনই স্থানীয় এলাকার চাঁদাবাজ। শাহজালালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২৫টির ওপরে মামলা রয়েছে। স্থানীয় এলাকার ফুটপাত ও বাজারের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে রুবেলের সঙ্গে বিরোধ হয় নিবির ও শাহজালাল।
আধিপত্য বিস্তারের জেরে নিবির এবং শাহজালাল দুজন মিলে রুবেলকে মারার জন্য হাবিব নামে একজনকে ঠিক করে। তারই ধারাবাহিকতায় নিবির হাবিবকে চাপাতি কেনার জন্য ৪ হাজার টাকা দেয়। টাকা দিয়ে হাবিব খিলগাঁও বাজার থেকে দুটি চাপাতি কেনে। পরবর্তী সময়ে ঘটনার আগের দিন শাহজালাল ও হাবিব মিলে রুবেলকে মারার পরিকল্পনা করে।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন অনন নামে আরেকজন তার ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল নিয়ে রুবেলের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে। পরে রুবেল রিকশায় করে বাসার দিকে রওনা হলে অনন খবরটি হাবিবকে জানায়। ওই খবর পেয়ে হাবিব-আলিফ চাপাতি নিয়ে রুবেলের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। তখন মেহেদী হাসান ও সানি রাস্তার দুই পাশে পাহারায় থাকে। পরে রুবেলকে রিকশায় দেখতে পেয়ে হাবিব ও আলিফ চাপাতি নিয়ে এগিয়ে এলে রুবেল দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে পেছন থেকে হাবিব ও আলিফ তাকে ধাওয়া করে।
তিনি আরও বলেন, আলিফ রুবেলের মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপ দিলে সে মাটিতে পড়ে যায়। সে সময় হাবিব ও আলিফ চাপাতি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চারজন একসঙ্গে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় চাপাতি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে যায়। পরে ভিকটিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এ ঘটনায় আর কে কে জড়িত রয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে ডিবিপ্রধান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। অননসহ আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান চলছে।