স্টাফ রিপোর্টার- বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। তবে এতে হতাহত হওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, হঠাৎ করে শুক্রবার রাতে আবারও গোলাগুলি শুরু হয়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়েছেন কি না জানা যায়নি।
শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের কমিউনিটির নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, শূন্যরেখার আশপাশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। তবে নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা জানান, সীমান্তে গোলাগুলি হওয়ার কোনো তথ্য তিনি পাননি।
গত বুধবার মিয়ানমারের দুই বিচ্ছিন্নতাবাদী রোহিঙ্গা সংগঠনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শূন্যরেখায় গোলাগুলি হয়। ওই দিন হামিদ উল্লাহ (২৭) নামের একজন মারা যান। শিশুসহ দুজন আহত হন। গুলিবিদ্ধ আহত রোহিঙ্গা ব্যক্তি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এরপর ওই দিন বিকেলের দিকে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আগুন লাগানো হলে সাড়ে পাঁচ শতাধিক বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। প্রাণ রক্ষায় অনেক রোহিঙ্গা কাঁটাতারের বেড়ার ভেতরে এবং আরও কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশের তুমব্রু স্কুলে আশ্রয় নেন। ওই শিবিরে ৬২১টি বসতঘরে ৪ হাজার ২০০ রোহিঙ্গা ছিলেন।
বুধবার বিকেলে সন্ত্রাসীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যায় শুন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের ঝুপড়ি। এ সময় নারী, শিশুসহ অনেক রোহিঙ্গা নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নেন। পরে তাদের সেখান থেকে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এলাকায় বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের কড়া নজরদারি রয়েছে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, সীমান্তের পরিবেশ হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে উঠেছে। অধিকাংশ রোহিঙ্গার ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে সংখ্যা কয়টি হবে তা এখনও জানা যায়নি। সীমান্তের সার্বিক বিষয় বিজিবি নিয়ন্ত্রণ করে। তারই এই বিষয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ করতে পারবেন। ঘটনার পর আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ে অবহিত করেছি। পরবর্তী নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী কাজ করা হবে বলে জানান ইউএনও।