কুয়েট প্রশাসন ও ছাত্ররাজনীতিকে, লাল কার্ড প্রদর্শন করলেন শিক্ষার্থীরা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) প্রশাসনসহ রাজনৈতিক সব ছাত্রসংগঠনকে রেড কার্ড দেখালেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশে দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রীসহ সব রাজনৈতিক সংগঠনকে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। একই সঙ্গে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘নো ছাত্রদল, নো ছাত্রশিবির, নো বৈবিছাআ, অনলি ছাত্র’; ‘রক্ত যখন ঝরছিল, প্রশাসন তখন কই ছিল?, ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘উই ওয়ান্ট নলেজ, নো পলিটিকাল ডামেজ, ‘শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরে, প্রশাসন তামাশা করে’, ‘ছাত্র মেরে করিস পাপ, রাজনীতি অভিশাপ’,’ মনে রেখো প্রত্যেকে জুলাই শেষে কিন্তু আগস্ট আসে’, ‘ছাত্রদের রক্ত দিয়ে তোমাদের ক্ষমতার পিপাসা আর কত মিটবে?’, ‘ছাত্ররাজনীতি রেড কার্ড ‘, ‘বহিষ্কার, বহিষ্কার, জড়িতদের বহিষ্কার’, ‘মাছুদ তুই কুয়েট ছাড়’, ‘বকুল ফুল, বকুল ফুল, ভিসি তুমি করেছ ভুল,’ ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘তুমি কে, আমি কে, আবরার, আবরার, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ,‘দড়ি ধরে মারো টান ভিসি হবে খান খান’ এসব প্ল্যাকার্ডের সঙ্গে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। লাল কার্ড প্রদর্শনের সময় তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন।

লাল কার্ড প্রদর্শন শেষে কয়েক জন শিক্ষার্থী সমাবেশে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, মঙ্গলবার বহিরাগতরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছয় দফা দাবি দেওয়া হয়েছে। তবে কুয়েট প্রশাসন সেটা মানেনি। এ ঘটনায় কুয়েটের ভিসি, প্রোভিসি এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে বর্জন করা হয়েছে। পাশাপাশি কুয়েট ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে রেড কার্ড প্রদর্শন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, কুয়েট প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এ কারণে তাঁরা নতুন প্রশাসন চান। এ দাবি জানিয়ে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেবেন।

সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা দুর্বার বাংলার পাদদেশ থেকে একটি মিছিল বের করেন। এটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে দুর্বার বাংলার পাদদেশে এসে শেষ হয়।
আজ বিকেল তিনটায় ছাত্র কল্যাণ কেন্দ্রে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি এবং হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পরিদর্শন করা হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

এদিকে গতকাল বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৩তম সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্পৃক্ততা পেলে শিক্ষার্থীদের আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না।

মঙ্গলবার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে ঘটা সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়েছে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এম এম এ হাসেমকে প্রধান করে চার সদস্যের কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বুধবার রাতে খান জাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০–৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে কুয়েট প্রশাসন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ