মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এর নিয়ন্ত্রণ আবারও দুষ্কৃতকারীদের হাতে চলে গেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে অবৈধ অর্থ বা ই-মানি তৈরির আশঙ্কা নতুন করে দেখা দিয়েছে।
শনিবার (১৭ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সম্প্রতি আদালতের আদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নগদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এই সুযোগে প্রতিষ্ঠানটির নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ উচ্চপদে রদবদল শুরু করেছে আগের বিতর্কিত কর্তৃপক্ষ। ফরেনসিক অডিটে সহায়তার অভিযোগে ইতোমধ্যে ২৩ জন কর্মকর্তা চাকরি হারিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, আগামী ১৯ মে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এরপরই নগদের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানা যাবে।
এর আগে হাইকোর্ট নগদে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয়, যার ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিয়োগ পাওয়া প্রশাসক দলের নিয়ন্ত্রণও শেষ হয়ে যায়। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডাক বিভাগ—দুই পক্ষই নিয়ন্ত্রণ হারায়।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার এক আসামি মো. সাফায়েত আলমকে নতুন সিইও হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি দায়িত্ব নিয়ে মানবসম্পদ বিভাগে ব্যাপক রদবদল শুরু করেছেন এবং গত দুই দিনে ২৩ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। এ ছাড়া মামলার আরও দুই আসামিকে নতুন পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার নগদে প্রশাসক বসায়। এরপর তদন্তে উঠে আসে ভুয়া এজেন্ট ও পরিবেশকের মাধ্যমে বড় ধরনের অর্থ আত্মসাত এবং অতিরিক্ত ই-মানি তৈরির অভিযোগ। হিসাব মিলছে না প্রায় ২,৩৫৬ কোটি টাকা। এসব অনিয়মে সংশ্লিষ্ট ছিলেন সাবেক সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, “নগদে আগে বিশৃঙ্খলভাবে কাজ চলেছে। সরকারের পরিবর্তনের পর আমরা দায়িত্ব নিয়ে তা সংস্কারে কাজ করছিলাম। এখন আদালতের আদেশে আমাদের সেই দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছে। তবে জনগণের অর্থের নিরাপত্তায় আমরা ফের দায়িত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছি।”