পথে প্রান্তরে ডেস্ক: একদিকে ডলার সংকট অন্যদিকে সরবরাহকারীদের অনীহায় সার আমদানি করতে পারছে না সরকার। ফলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে আগামী রবি মৌসুমের জন্য যে ৪০ লাখ টন সার প্রয়োজন, তা কৃষকদের মাঝে সরবরাহ নিয়ে । এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌসুম শুরু হওয়ার অন্তত তিন মাস আগে আমদানি প্রক্রিয়া শুরু করতে না পারলে ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে বিপর্যয় নামবে। এ জন্য শিগগিরই বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে বলে পরামর্শ তাদের।
খরিপ ও রবি দুই মৌসুমে দেশে প্রায় ৭০ লাখ টন সারের চাহিদা। এরমধ্যে খরিপে প্রয়োজন ৩০ লাখ এবং বাকি ৪০ লাখ টন প্রয়োজন হয় রবিতে। চাহিদার পুরো এই সার মূলত সরবরাহ করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বিসিআইসি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান বিএডিসি। প্রতিষ্ঠান দুটির হিসাবে সবমিলে সার মজুদ আছে ১৭ লাখ টন। এরমধ্যে ইউরিয়া ৫ লাখ ৭০ হাজার, টিএসপি ৩ লাখ ১৯ হাজার, ডিএপি ৩ লাখ ৯৩ হাজার এবং এমওপি সার আছে ৪ লাখ ১১ হাজার টন। যা চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই শেষ হয়ে যাবে।
সমস্যা হচ্ছে রবি মৌসুমের জন্য যে ৪০ লাখ টন সার প্রয়োজন, তা আমদানির প্রক্রিয়া এখনো শুরু করতে পারেনি সরকার। কারণ হিসেবে ডলার সংকট ও সরবরাহকারীদের অনীহাকে দায়ী করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বোরো ধান ও শীতকালীন শাকসবজি আবাদ নিয়ে ভয়াবহ সংকটের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের দাবি, ক্রয়াদেশ থেকে শুরু করে জাহাজে সার আসতে অন্তত তিন মাস সময় প্রয়োজন। কিন্তু এখনও সেই কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় উৎপাদনে বিপর্যয়ের শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
এ ব্যাপারে সাবেক কৃষি সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, এখন যদি সার আমদানি না করি তাহলে প্রতি কেজি আলুর দাম হয়ে যাবে একশ’ টাকার বেশি। এ অবস্থায় আলু-পেঁয়াজ ও শীতের সবজি আমদানি করতে হবে। যা আমাদের কাম্য নয়।
আরও পড়ুন: বাজেট বাস্তবায়নের কঠিন দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের কাঁধে
এদিকে সংকট উত্তরণে সার আমদানির বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করছেন কৃষি অর্থনীতিবিদরা। প্রয়োজনে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় দেশীয় কারখানাগুলো চালু করার পরামর্শ তাদের।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, আমাদের যেহেতু ঘাটতি রয়েছে সে ক্ষেত্রে আমদানি তো করতে হবে। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে নিজস্ব যেসব ফ্যাক্টরি রয়েছে তা কীভাবে চালু করতে পারি এবং সেখান থেকে পর্যাপ্ত উৎপাদন বাড়াতে পারি। খাদ্য সংকট মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিবে অন্তর্বর্তী সরকার। এমনটাই আশা সংশ্লিষ্টদের।