Search
Close this search box.

স্ত্রীকে হত্যা করে পরিচয় বদলে ২১ বছর পলাতক

স্টাফ রিপোর্টার \ স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার পর পরিচয় বদলে দীর্ঘ ২১ বছর পলাতক থাকার পর ঘাতক স্বামী মো. আলম (৪০)র‌্যাবের হাতে ধরা পড়েছে।

শনিবার দিনগত রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মানিকগঞ্জের সিংগাইর এলাকায় গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে আম্বিয়া হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আলম।

র‌্যাব বলছে, ২০০১ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হওয়ার তিন মাসের মাথায় যৌতুকের জেরে স্ত্রী আম্বিয়াকে পুড়িয়ে হত্যা করে আলম। ঘটনার ৫ বছর পর ঢাকার বংশাল এলাকায় নিজের নাম-ঠিকানা গোপন রেখে করে দ্বিতীয় বিয়ে। তখন থেকে ভিন্ন পরিচয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করে আসা আলম আর কখনোই মানিকগঞ্জের নিজ বাড়িতে যায়নি।

রবিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ‌র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।

গ্রেফতারকৃত আলমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, ২০০১ সালের জুন মাসে আম্বিয়া বেগমের (১৮) সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় আলমের। বিয়ের সময় আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রনিকস সামগ্রী, নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার দিলেও কিছুদিন পরেই আরও ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে আলম। টাকা দিতে না পারায় স্ত্রী আম্বিয়াকে প্রায়ই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে সে। একপর্যায়ে টাকা না পাওয়ায় ভিকটিমকে মারধর করে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় এবং টাকা না আনলে নিজ বাড়িতে উঠতে দিবেন না বলে জানায় আলম।

২০০১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আলম ভিকটিমের বাবার বাড়িতে এসে ঘরের বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। বাড়ির পাশের রাস্তায় নিয়ে আম্বিয়াকে চর, থাপ্পর, কিল, ঘুষি মারতে থাকে। আম্বিয়া মাটিতে পড়ে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরদিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আম্বিয়া মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি আলমের মারধর এবং আগুন ধরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বলে গেছেন। এ ঘটনায় ৭ সেপ্টেম্বর সিংগাইর থানায় দায়েরকৃত মামলায় ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। পরবর্তীতে আদালত আলমকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। ডেথ রেফারেন্সের জন্য মামলা উচ্চ আদালতে গেলে সেখানেও তার মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, স্ত্রী আম্বিয়াকে হত্যার ৫ বছর পর পরিচয় গোপন করে ঢাকার বংশালে দ্বিতীয় বিয়ে করে বসবাস করতে থাকে আলম। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সে কখনোই আর নিজ বাড়িতে যায়নি। এর মধ্যে বাবা-মায়ের নাম ও ঠিকানা পাল্টে জাতীয় পরিচয়পত্রও বানায় সে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসা আলম সর্বশেষ একটি জুতার কারখানায় কাজ করত।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ