স্টাফ রিপোর্টার \ রাজধানীর হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী পারপিতা ফাইহার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করবে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর । এ জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে।
পারপিতা ফাইহার মৃত্যুর পেছনে কোনো শিক্ষকের ভূমিকা রয়েছে কি না এবং স্কুলের কোনো দায়দায়িত্ব আছে কি না তা অনুসন্ধান করবে কমিটি।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ডিআইএ এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন সংস্থাটির যুগ্ম-পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার।
তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন ডিআইএ’র ঢাকা বিভাগীয় শাখার উপ-পরিচালক ড. রেহানা খাতুন। কমিটির আরেক সদস্য হলেন শিক্ষা পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসেন। বুধবার থেকে কাজ শুরু করবে কমিটি।
পুলিশ বলছে, ১২ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে পারপিতা ফাইহা ‘আত্মহত্যা’ করে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ের হলিক্রস স্কুলে ঘটনা ঘটে। পারপিতা নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর পারপিতাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে নেওয়া হয় পান্থপথের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পারপিতা মারা যায়। সে তার পরিবারের সঙ্গে থাকত। তার বাবা একজন ব্যবসায়ী।
এদিকে বেশ কয়েকটি অনলাইন পোর্টালের প্রকাশিত সংবাদে শিক্ষার্থীদের সূত্রধরে বলা হয়, পারপিতা হলিক্রসে প্রথম স্থান অধিকারকারী ছাত্রী। উচ্চতর গণিতে ফেল করার অপমান সহ্য করতে না পেরে সে আত্মহত্যা করে। স্কুলের এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় তাকে ফেল করানো হয়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক শিখা রায় বলেন, পারপিতা হলিক্রস স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। সপ্তম শ্রেণির পরীক্ষায় সে ২৭তম স্থান অর্জন করে। এরপর করোনার কারণে আমরা সব পরীক্ষা নেইনি। অষ্টম শ্রেণিতে এসে সে পরীক্ষায় ৩২তম স্থান করে। প্রথম স্থানে ওই ছাত্রী কখনো আসেনি। সে আমাদের মেয়ে। এমন ঘটনা সত্যি দুঃখজনক। এখন কী করা যায় এ নিয়ে আমরা ভাবছি।
তিনি বলেন, ছাত্রীর আত্মহত্যার কারণ হিসেবে যে অভিযোগ উঠেছে সেটি খতিয়ে দেখা হবে। আমাদের প্রশাসন অনেক স্বচ্ছ। স্বচ্ছতার মধ্যে কীভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে তা আমরা খতিয়ে দেখবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিআইএ’র পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার বলেন, আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চাই। হলিক্রসের শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষকদের আদর্শ হিসেবে মনে করে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কোচিং বাণিজ্যের কারণে নানাভাবে শিক্ষার্থীদের ভয়-ভীতি ও চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ আমরা পেয়ে থাকি। এখানে সে ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না তা খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা বুধবার থেকে কাজ শুরু করবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, কমিটির সদস্যরা ঘটনা খতিয়ে দেখতে সরজমিনে যাবেন। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলবেন। সেখানে কোনো আইনের ব্যত্যয় হয়েছে কি না সেসব বিষয় খতিয়ে দেখবেন। কোনো শিক্ষকের অনিয়ম পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সুপারিশ করবো।