Search
Close this search box.
“দশ বছরে আট মামলা”

জুস খাইয়ে লঞ্চ যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেয় খাইরুল সহ অন্যান্যরা

স্টাফ রির্পোটার- সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ও লঞ্চের কেবিনসহ লঞ্চে চুরি, অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাই চক্রের মূল হোতা সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ খাইরুল ইসলাম বিশ্বাস (৩০) ও মোঃ স্বপন হাওলাদার (৪২) । এসময় তাদের কাছ থেকে কেবিনের তালা খোলার কাজে ব্যবহৃত একাধিক নকল চাবি, চুরি-ছিনতাই শেষে মালামাল বহনে ব্যবহৃত একটি কাধে ঝোলানে ব্যাগ, যাত্রীদের অজ্ঞান করার কাজে ব্যাবহৃত জুসের বোতল, দুইটি মোবাইল সেট, নগদ ৮,৩০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

নৌ পুলিশ ঢাকা রিজিয়নের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, সম্প্রতি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা ও লঞ্চের কেবিন থেকে মূল্যবান জিনিস চুরি যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। অভিযোগের সত্যতা যাইয়ের লক্ষে অনুসন্ধান শুরু করে। পরবর্তীতে সদরঘাট নৌ থানা-পুলিশের সদস্যরা উক্ত চোর চক্রের সদস্যদের সনাক্ত ও চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারের জন্য তৎপরতা চালায়।

তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও বিভিন্ন লঞ্চ থেকে প্রাপ্ত সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষন করে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য সদরঘাট এলাকায় সাদা পোষাকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সাদা পোষাকের পুলিশ সদস্যরা সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা অবস্থায় আসমীদ্বয় কে সদরঘাট এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা লঞ্চে চুরি, অজ্ঞান পার্টি সহ ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের আরো ৬ থেকে ৭ জনের একাধিক গ্রুপ রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ অভিনব কৌশলে চুরি করে আসছিল। চুরি করতে গিয়ে অনেক সময় তারা যাত্রীদের বিভিন্নভাবে চেতনানাশক ঔষধ, পানি, জুস, চা, বিস্কুট সহ অন্যান্য খাবার দ্রব্যের সাথে প্রয়োগ করে তা বিভিন্নভাবে যাত্রীদের খাইয়ে অজ্ঞান করে। এরপর যাত্রীদের স্বর্বস্ব লুটে নেয়। এছাড়াও ক্ষেত্রবিশেষ তারা যাত্রীদের মালামাল ছিনতাই করত।

পুলিশ সুপার আরও জানান, মোঃ রেজাউল করিম নামের একজন ভূক্তভোগী গত ১৪ সেপ্টেম্বর তার গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি যাওয়ার উদ্দেশ্যে সুরভী-৭ লঞ্চের ৩ তলার ৩০৫নং কেবিনে উঠেন। পরবর্তীতে সে তার পরিবার সহ রাতের খাওয়া দাওয়া করার জন্য উক্ত লঞ্চের ক্যান্টিনে গেলে সেই সুযোগে চোর চক্র অভিনব কৌশলে কেবিনের তালা খুলে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার সহ আনুমানিক পাঁচ লক্ষ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগী রেজাউল করিম সদরঘাট নৌ থানায় অভিযোগ দায়ের করলে সিসিফুটেজ বিশ্লেষন করে গ্রেফতারকৃত আসামীদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রেজাউল করিম জানান, পেশায় সে একজন পরিবহন ঠিকাদার। নিজ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার ওইদিন সে জন্য লঞ্চে উঠে। তার কেবিন থেকে ক্যান্টিনে খাওয়ার জন্য গেলে ফিরে এসে দেখেন তার টাকা পয়সা, স্বর্নালঙ্কার ও মূল্যবান কিছু কাগজপত্র চুরি হয়ে গেছে। বিষয়টি সে সাথে সাথেই নৌ পুলিশ ইউনিট কে অবহিত করেন।

নৌ পুলিশের প্রধান বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো:শফিকুল ইসলাম বলেন, ধৃত চোর চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় চুরি করে যাত্রীদের নিঃস্ব করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ খাইরুল ইসলাম বিশ্বাস এর বিরুদ্ধে সর্বমোট আটটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি জানান, নৌ-পুলিশের এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে। আসামীদ্বয় গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের নিকট প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে চোর চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সহ পলাতক আসামীদের গ্রেফতার এবং চুরিকৃত আলামত উদ্ধারের লক্ষ্যে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত আছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ