Search
Close this search box.

বাংলাদেশ থেকে কাতারে পাচার হচ্ছিল কোকেন! আটক ৫

স্টাফ রিপোর্টার- ফুটবল বিশ্বকাপ দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছিল কোকেন। বিশ্বকাপ খেলা সরাসরি মাঠে বসে দেখতে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা কাতারে আসবেন। আর এই সময় কোকেনের চাহিদা থাকায় আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের সহযোগিতায় বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছিল কোকেন। রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে কোকেনসহ মাদক পাচার চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা।

রাজধানীর খিলক্ষেত বাজার বেপারীপাড়া রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৫০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করা হয়। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মিন্টু কর্মকার (৩৪), এজাহার মিয়া (৩৮), নাজিম উদ্দিন ওরফে মুন্না (৪০), মো. নাজিম উদ্দিন (৪৫) ও মো. মামুনকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। এই চক্রের সন্দেহভাজন অন্যতম হোতা মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩৩) পলাতক আছেন।

মঙ্গলবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ) গেন্ডারিয়া কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা মো. জাহাঙ্গীর আলম কক্সবাজারের স্থানীয় একটি গাড়ির চালক। বেশ কয়েক বছর ধরে জাহাঙ্গীর আলম এবং গ্রেফতারকৃত পাঁচ জন মিলে এ ধরনের মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। প্রথমে ইয়াবা ও আইসের ব্যবসা করছিলেন তারা। পরে অন্য একটি চক্রের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে অধিক মুনাফা লাভের আশায় কোকেন পাচারে যুক্ত হন।

মাদকের চালানটি কোথা থেকে এসেছে, এ ব্যাপারে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, মো. জাহাঙ্গীর আলম গভীর সমুদ্রের একটি ট্রলার থেকে এসব মাদক সংগ্রহ করেন। পরে কক্সবাজার এলাকায় তাদের কাছে হস্তান্তর করেন ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য। গ্রেফতারকৃতরা সবাই ক্যারিয়ার। কোকেনের চালান মিয়ানমার, ভারত বা শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশ হয়ে কাতারে যাচ্ছিল বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা।

এসব কোকেন বাংলাদেশ থেকে কাতারে কীভাবে বাজারজাত করার পরিকল্পনা ছিল– এমন প্রশ্নের জবাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জানান, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজের সন্ধানে যারা কাতার যাচ্ছিল তাদের টার্গেট করতো এই চক্রের সদস্যরা। এছাড়াও কাতারগামী বিভিন্ন যাত্রীকে তারা টার্গেট করতো। পরে তাদের বিভিন্ন প্রলোভনে ফেলে আর্থিক বিষয়টি সামনে এনে মাদক পাচারে সহায়তা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতো। এর আগেও এ ধরনের কোকেন পাচার করেছে কিনা বা এর সঙ্গে আর কারা  জড়িত তা খতিয়ে দেখছেন কর্মকর্তারা।

গ্রেফতারকৃতদের বরাত দিয়ে কর্মকর্তারা জানান, জব্দকৃত ২৫০ গ্রাম কোকেনের বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা। কক্সবাজার থেকে রাজধানীতে সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে পারলে তারা এ থেকে ২০ ভাগ কমিশন পেতেন বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য দিয়েছেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল বলেন, মাদক পাচার চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন পেশার আড়ালে এ ধরনের অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিল। যাদের আমরা গ্রেফতার করেছি তাদের মধ্যে মিন্টু কর্মকার মোবাইল সার্ভিসিং দোকানের মালিক, এজাহার মিয়া মাছের ঘেরের মালিক, নাজিমুদ্দিন ওরফে মুন্না ফলের ব্যবসায়ী, নাজিমউদ্দিন ফলের দোকানের কর্মচারী ও মো. মামুন গাড়িচালক। আর এই চক্রের অন্যতম হোতা জাহাঙ্গীর আলমও গাড়িচালক। সে পলাতক। তাকে ধরতে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ঢাকা মেট্রো দক্ষিণ) সহকারী পরিচালক সুব্রত সরকার শুভ বলেন, এই মাদক পাচারকারী চক্রের অন্যতম মূলহোতা জাহাঙ্গীর আলম। জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার করা গেলে এই কোকেন কোথা থেকে এসেছে এবং কোন কোন ব্যক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচারের পরিকল্পনা ছিল এসব বিষয়ে জানতে পারবো। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে খিলক্ষেত থানায় মামলা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ