স্টাফ রিপোর্টার- বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকাসহ পুরো রাজধানীজুড়ে নাশকতার আশঙ্কায় সতর্ক রয়েছে পুলিশ। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নয়াপল্টনের বিএনপির কার্যালয় এলাকাটি অবরুদ্ধ করে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শনিবার নয়াপল্টন এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এ কে এম হাফিজ আক্তার ।
তিনি বলেছেন, বিএনপির গণসমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, দলটির নেতাকর্মীরা ঘরে না ফেরা পর্যন্ত নয়াপল্টনসহ পুরো রাজধানী নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকবে।
হাফিজ আক্তার বলেন, নয়াপল্টনে ব্যারিকেট দেওয়া হয়েছে, কারণ আমাদের কিছু ইন্টেলিজেন্স আছে। এখানে যে কোনো ধরনের নাশকতা হতে পারে। যদিও আমরা আশা করছি সেটা হবে না। কিছু গোয়েন্দা রিপোর্ট থাকে, তবে বিএনপির গণসমাবেশ যদি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় এসব নিরাপত্তা বলয় উঠে যাবে। ঢাকা শহর সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিগত কয়েকদিনের কতগুলো ঘটনার জন্য নিরাপত্তা বাড়িয়েছি। ঢাকা মহানগরে যে জনগণ রয়েছে তাদের নিরাপত্তা ও সমাবেশের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এ বলয়ের ব্যবস্থা রেখেছি।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, আমরা আশা করবো, দেশের সব বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো ঢাকায়ও বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে।
তিনি বলেন, গোলাপবাগ এলাকায় ট্যাফিক ডাইভারশন দিয়েছি, যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। এছাড়া ঢাকা শহরে যানবাহনও চলছে। পাশাপাশি সব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন রেখেছি, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে।
সরোজমিনে রাজধানী ঘুরে বিপুল পরিমান পুলিশ সদস্যদের উপস্থিত ছিল লখ্য করার মত। রাস্তার মোড়ে মোড়ে প্রতিটি পয়েন্টে ছিল কড়া পুলিশ প্রহড়া। এদিন ডিএমপির পাশাপাশি আমর্ড পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। এছাড়াও পুলিশের সাথে রাজধানীজুড়ে দায়িত্ব পালন করে কয়েক হাজার আনসার সদস্য।
পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র্যাবের টহল ছিল পুরো রাজধানী জুড়ে। এছাড়াও গোলাপবাগের বিএনপির সমাবেশে স্থল ও এর আশে পাশে র্যাবের হেলিকাপ্টার টহল দিতেও দেখা যায়।
এদিন নানান হাকডাক ছাপিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিল রাজধানীজুড়ে। গণপরিবহন কম। সড়কে ছিলনা চিরচেনা মানুষের চাপ। অনেকটাই ফাঁকা ছিল রাজধানী ঢাকা।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই চিত্র পাওয়া গেছে। সকাল থেকে রাজধানীর গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও পল্টন এলাকায় ৬-৭টি মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ১০-১৫ জনকে।
উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের জনপদ ময়মনসিংহ ও সিলেটের মানুষের রাজধানীর অন্যতম প্রবেশ পথ ডেমরা সুলতানা কামাল সেতুর শেষ প্রন্তে সর্তক অবস্থায় দেখা গেছে ডেমরা থানা আওয়ামী স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।
এদিকে টিএসসি, মধুর ক্যান্টিনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পৃথক পৃথক অবস্থান চোখে পড়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগেরও পৃথক অবস্থান রয়েছে।
অপরদিকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট ও প্রবেশদ্বারগুলোতে সতর্ক পাহারায় পুলিশ র্যাব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন চেকপোস্টে মানুষকে তল্লাশিও করতে দেখা গেছে।