Search
Close this search box.

সুলতানা কামাল ব্রিজের উপর থেকে পানিতে ঝাঁপ দেয় ফারদিন – র‌্যাব

স্টাফ রিপোর্টার-  বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ তারাবোর সুলতানা কামাল সেতুর উপর থেকে স্বেচ্ছায় পানিতে ঝাপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায় যে রাত ০২.০১ মিনিটে (সিসিটিভি ফুটেজ টাইম ০২.০৩) যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা হতে নিহত ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায়। রাত আনুমানিক ০২.২০ ঘটিকায় সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ্বরোডের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যায় ফারদিন।

অতঃপর রাত ০২.২৬ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিনের অবস্থান ছিল। রাত ০২.৩৪ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে আসে ফারদিন। উল্লেখ্য যে, ব্রিজের তারাবো প্রাপ্ত হতে সুলতানা কামাল ব্রিজের মাঝখান পর্যন্ত দুরত্ব আনুমানিক ৪০০-৫০০ মিটার। রাত ০২.৩৪ মিনিট ৯ সেকেন্ডে সুলতানা কামাল ব্রিজের রেলিং ক্রস করে রাত ০২.৩৪ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে সুলতানা কামাল ব্রিজের উপর থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেয়।

তিনি আরও বলেন, ঝাঁপ দেয়ার পর রাত
০২.৩৪ মিনিটে ২১ সেকেন্ডে শীতলক্ষ্যা নদীর পানিতে পড়ে ফারদিন। রাত ০২.৩৫ মিনিট ৯ সেকেন্ডে ফারদিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায় এবং রাত ০২.৫১ মিনিটে ফারদিনের হাতের ঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।

তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ অন্যান্য সকল সংশ্লিষ্ট আলামত বিবেচনায় নিয়ে আমাদের তদন্তে বের হয়ে আসে যে, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ হতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুবরণ করে। আমরা আমাদের তদন্তের সর্বশেষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়েছি। ফারদিনের মৃত্যু সংক্রান্ত অন্য কোন সূত্র বা আলামত পাওয়া  গেলে তা বিবেচনায় নিয়ে মামলার বিজ্ঞ তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

উল্লেখ্যা গত ৫ নভেম্বর কাজী নুর উদ্দিন নামক একজন ব্যক্তি তার সন্তান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ এর নিখোঁজ সংক্রান্তে রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। সেখানে তিনি লিখেন তার সন্তান গত ৪ নভেম্বর ২০২২ তারিখ বিকাল থেকে নিখোঁজ রয়েছে। এ শ্রেণিতে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও র‍্যাব নিখোঁজ শিক্ষার্থীকে খুঁজে বের করতে তদন্ত শুরু করে।

গত ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। পরবর্তীতে জানা যায় যে, মৃতদেহটি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ (২৪)। মৃতদেহটি উদ্ধারের পর ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে বহুলভাবে প্রচারিত হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক চ্যাঞ্চলের সৃষ্টি হয়।

তদন্তকারী সংস্থা তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ, সিসিটিভি ফুটেজসহ স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রের আলোকে জানায়, গত ৪ নভেম্বরবিকাল ৩ টায় রাজধানী ডেমরার কোনাপাড়া নিজ বাসা থেকে পরীক্ষার কথা বলে বুয়েটের হলের উদ্দেশ্যে বের হয় ফারদিন। বিকাল আনুমানিক ৫ টায় ফারদিন সায়েন্স ল্যাব মোড়ে তার পরিচিতার সাথে তিনি দেখা করে। অতঃপর সেখান থেকে নীলক্ষেত ও ধানমণ্ডিসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। পরবর্তীতে সাত মসজিদ রোডে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা করে।

অতঃপর রাত আনুমানিক ০৮.০০ ঘটিকায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে পরবর্তীতে তিনি রিক্সাযোগে রামপুরার উদ্দেশ্যে গমন করে। আনুমানিক রাত পৌনে ১০ টায় রামপুরা ব্রিজ এলাকায় রিক্সা থেকে নেমে যায় এবং কিছুক্ষণ রামপুরা ব্রিজ এলাকায় ঘোরাফেরা করে। পরবর্তীতে সে কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড, গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায়ও গমন করে।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনার কিছু মোটিভ তদন্তকারী সংস্থা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ