Search
Close this search box.
বর্নিল সাজে রাজধানীর সকল গীর্জা

বড়দিন উদযাপনে র‌্যাব-পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার- খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অলোকসজ্জার পাশাপাশি নানা রকম উপাদান দিয়ে সাজানো হয়েছে রাজধানীর সকল গীর্জায়।

বড়দিন উদযাপনকে নির্বিঘ্ন করতে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন কাকরাইলের সেন্ট ম্যারি’স ক্যাথেড্রালে সার্বিক নিরাপত্তা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, বড়দিন উপলক্ষে পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। গোয়েন্দা  নজরদারী অব্যাহত থাকবে। চার্চের ফটক গুলোতে থাকছে আর্চওয়ে  ও মেটাল ডিটেক্টর । বাড়তি নিরাপত্তার অংশ হিসেবে প্রতিটি চার্চে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে সাইবার মনিটরিং থাকবে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশের ডগ স্কোয়াড, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সোয়াত টিম প্রস্তুত থাকবে।

আইজিপি বলেন, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন উপলক্ষে আমি সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি ।

র‌্যাব মহাপরিচালক অতিঃ আইজিপি এম খুরশিদ হোসেন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ২৫শে ডিসেম্বর বড়দিনে সারাবিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বাংলাদেশের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরাও ধর্মীয় অনুভূতির পরম মমতায় আনন্দঘন পরিবেশে উৎসব পালন করবে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে যে কোন ধরণের অনাকাংঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় র‌্যাব ফোর্সেস কর্তৃক পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি, র‌্যাবের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত, চার্চসমূহে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র‌্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, ফুট ও মোবাইল পেট্রোল, ভেহিক্যাল স্ক্যানার, চেকপোস্ট, সিসিটিভি মনিটরিং এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

যে কোন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি ঠেকাতে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে র‌্যাবের চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হবে। অনলাইনে মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব ঠেকাতে র‌্যাবের সাইবার মনিটরিং টীমের সার্বক্ষনিক নজরদারী অব্যাহত রয়েছে। যে কোন ধরনের  উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় র‌্যাব স্পেশাল ফোর্স টীম, র‍্যাবের হেলিকপ্টার, ডগ স্কোয়াড, ও বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রয়েছে।

যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন (বড়দিন) উপলক্ষে র‌্যাব মহাপরিচালক বাংলাদেশে অবস্থানরত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীসহ পৃথিবীর সকল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। পাশাপশি ধর্মীয় সম্প্রীতির বাংলাদেশে খৃষ্টান ধর্মালম্বীসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদেরকেও শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখরভাবে বড়দিন উদযাপনের জন্য অনুরোধ জানান।

এদিকে আয়োজকরা বলছেন, দেশে করোনার ভয়ঙ্কর প্রকোপ থাকায় আগের বছরগুলোতে বড়দিনের উৎসব ছিল একেবারেই জৌলসুহীন। এবার করোনা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হওয়ায় সাড়ম্বরে উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। বড়দিনে গির্জা এবং খ্রিষ্টানদের বাড়ি বাড়ি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও প্রার্থনা চলবে যথারীতি।

বড়দিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে গির্জার ভেতরে বর্ণাঢ্য সাজসজ্জায় প্রতীকী গোশালা বসানো হচ্ছে। বেথলেহেমের গরিব কাঠুরের গোয়ালঘরে যিশুখ্রিষ্টের জন্মের কথা স্মরণ করে ধর্মীয় আবহ সৃষ্টি করতেই এই গোশালা বসান খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। ঐতিহ্যবাহী ও জাঁকজমকপূর্ণ এ সাজসজ্জায় রঙিন কাগজ, ফুল ও আলোর বিন্দু দিয়ে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হচ্ছে দৃষ্টিনন্দনভাবে। বিশেষ প্রার্থনা এবং খাবারের আয়োজনের প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে। বেশিরভাগ গির্জা ও গির্জার বাইরে আলোকসজ্জা, আনন্দ-উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বড়দিনের মেলার আয়োজন থাকবে।

রাজধানীর অভিজাত হোটেলগুলোর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনার প্রকোপ না থাকায় এবার হোটেলগুলোর বড়দিনের আয়োজনে জাঁকজমক থাকবে। সোনারগাঁও হোটেল, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, র‌্যাডিসন, লা মেরিডিয়েন, ওয়েস্টিন, হোটেল ওয়েসিস, ঢাকা রিজেন্সিসহ দেশের বড় বড় হোটেলে এসব বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। হোটেলগুলো সাজানো হবে রঙিন বাতি আর ফুল দিয়ে। সাজানো হবে ক্রিসমাস ট্রি। সীমিত পরিসরে থাকবে সান্তা ক্লজের চমকপ্রদ উপস্থাপনা ও শিশু-কিশোরদের জন্য নানা উপহার। কোথাও কোথাও বড়দিনের কেক কাটা হবে।

তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জা হোলি রোজারিও চার্চের (পবিত্র জপমালা রানীর গির্জা), কাকরাইলের সেন্ট মেরিস ক্যাথেড্রাল এবং মণিপুরিপাড়া, বারিধারাসহ কয়েকটি গির্জা ঘুরে বড়দিন ঘিরে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতির কথা জানা গেছে।

তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জা হোলি রোজারিও চার্চের (পবিত্র জপমালা রানীর গির্জা) সাবেক পাল পুরোহিত এবং ফার্মগেট তেজকুনীপাড়ার সেন্ট জন ভিয়ানী হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ফাদার কমল কোড়াইয়া বলেন, এবার করোনা না থাকায় মানুষ নির্ভয়ে বড়দিনের উৎসব উদযাপন করবেন। বড়দিনের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির বাইরে সামাজিক-সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলোও থাকবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ