স্টাফ রিপোর্টার- চাঁদার দাবীতে কেরানীগঞ্জের অটোরিক্সাচালক রুবেল হত্যাকান্ডে জড়িত আসামী বাপ্পি (২৫) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। জানা গেছে গ্রেফতারকৃত আসামি বাপ্পি পেশাদার ছিনতাইকারী দলের একজন সক্রিয় সদস্য।
পিবিআই ঢাকা জেলার একটি চৌকস দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত বাপ্পি ফুটপাতের দোকানদারদের নিকট থেকে বিভিন্ন সময় চাঁদা আদায় করতে সংঘবদ্ধ হয়ে ভয় দেখাতো এবং প্রয়োজনে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চাঁদা আদায় করতো।
মামলার সূত্রে জানান যায়, নিহত ভিকটিম রুবেল খান স্বপরিবারে কেরানীগঞ্জের পূর্ব বন্ধ ডাকপাড়া এলাকায় বসবাস করত এবং ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত।
ওই এলাকার বাসীন্দা মোবারক (২৮) ও নিহত ভিকটিম রুবেলের ছোট ভাই শাহিন (২৫) যৌথভাবে তাদের বাসার সামনে বাচ্চাদের খেলনার দোকান দেয়। গত ১ মে সন্ধ্যায় এজাহারনামী আসামী বাপ্পী, মাসুদ ও ইমন হাওলাদাররা মোবারক (২৮) ও শাহিন এর নিকট বিশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে বিভিন্ন হুমকি দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি হয়। সেখানে ভিকটিম মোঃ রুবেল সেখানে উপস্থিত হয়ে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে থেকে উভয় পক্ষকেই সরিয়ে দেয়।
ঘটনার দিন গত ২ মে রাত সাড়ে বার টার সময় ভিকটিম রুবেল বাসা থেকে দোকানের উদ্দেশে বের হয়ে আবুল সর্দারের গলিতে এসে আসামী বাপ্পী, ইমন, রাজিব, রকি, পাপ্পু, মাসুদ, সহ আজ্ঞতনামা আসামীদের পূর্ব বিরুধের জের ধরে মোবারককে মারতে দেখে মোবারককে বাঁচাতে এগিয়ে যায়। ওই মুহুর্তে আসামী বাপ্পী, ইমন, রাজিব, রকি, পাপ্পু, মাসুদ, সহ আজ্ঞতনামা আসামীরা ভিকটিম রুবেল এবং মোবারককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আহত করে। তাদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে আসামীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় ভিকটিম রুবেল ও মোবারককে চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিম রুবেলকে মৃত ঘোষনা করে ।
এ ঘটনায় নিহত রুবেলের মা বাদী হয়ে আসামী মোঃ ইমন হাওলাদার, মোঃ রাজিব, মোঃ রকি, মোঃ জীবন, মোঃ বাপ্পী, মোঃ পাপ্পু, মাসুদ সহ অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ- পরিদর্শক বিশ্বজিত বিস্বাস জানান, থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালতে ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলার বাদী থানা পুলিশের দাখিলকৃত পুলিশি রিপোর্টের বিরুদ্ধে না-রাজীর আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে পিবিআই ঢাকা জেলা মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত ইমন একজন ঠিকানাবিহীন আসামী। পিবিআইয়ের এসআই ইমরান আহম্মেদ, এসআই আনিসুর রহমান, এসআই শহীদুল ইসলাম, এএসআই জসীমউদ্দিন মোল্লার সহযোগীতায় অভিযান পরিচালনা করে ঠিকানা বিহীন গুরুত্বপূর্ণ মোঃ বাপ্পি (২৫) কে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকার আগানগর ইস্পাহানি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে আসামী বাপ্পিকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তিনি আরও জানান, একই মামলায় গ্রেফতারকৃত এজাহার নামীয় আসামী ইমন হাওলাদার, রাজিব, রকি, জীবন মাতুব্বর বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্য বিধির ১৬৪ ধারামতে দোষ-স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছে এবংঘটনার সাথে গ্রেফতারকৃত মোঃ বাপ্পিও জড়িত রয়েছে বলে সকল আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে প্রদত্ত জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে।