বিনোদন রিপোর্টার – শিল্পী সমিতির নির্বাচিত কমিটি থেকে অভিনেত্রী সুচরিতা ও চিত্রনায়ক রুবেলের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। ২০২১-২০২৩ মেয়াদে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সুচরিতা কার্যনিবাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং রুবেল সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। এটাও শোনা যাচ্ছে, জায়েদ খানের সদস্যপদ বাতিল হতে পারে।
রবিবার সমিতির জরুরী সভা ডেকেছে শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটি। মিটিংয়ের মূল আলোচনার বিষয় জায়েদ খান। এই জরুরি সভা থেকে আসতে পারে জায়েদ খানের সদস্য পদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত। ২০২১-২০২৩ মেয়াদী চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সুচরিতা কার্যনিবাহী সদস্য আর রুবেল সহ-সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে কার্যনিবাহী কমিটির পরপর ৩ মিটিংয়ে অংশ গ্রহণ করেননি এমনকি সমিতির উন্নয়নমূলক কোনো কাজে দেখা যায়নি বলে তাদের তাদের সদস্যপদ স্থগিত করে শিল্পী সমিতি।
শিল্পী সমিতি থেকে প্রাপ্ত এক চিঠিতে দেখা যায়, কার্যনির্বাহী কমিটির পর পর তিন মিটিংয়ে অংশ গ্রহণ করেননি এবং সমিতির উন্নয়নমূলক কোনো কাজে দেখা যায়নি সুচরিতা এবং রুবেলকে। পর পর তাদের নোটিশ দেওয়া হলেও কোনো সাড়া দেননি। তাই তাদের কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় সেই চিঠিতে। এই চিঠিতেও সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিপুন আক্তারের সই করা চিঠিটি ইস্যু হয়েছে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি।
এ বিষয়টি নিয়ে জায়েদ খান বলেন, রুবেল ভাই ও সুচরিতা আপার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। আদালত যখন সাধারণ সম্পাদক পদে স্থিতাবস্থার রায় দিয়েছে, তখন তারা কেউই সমিতির মিটিংয়ে যায়নি। তখন তাদের কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেবতো সমিতির সভাপতি হিসেবে তাদের চিঠি দিতে পারেন না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চিঠি দিতে পারেন সাধারণ সম্পাদক অথবা সহ-সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু তা হয়নি, এ বিষয়ে সুচরিতা ম্যাডাম ও রুবেল সাহেব ব্যাখ্যা চাইলেও জবাব মেলেনি। উল্টো তাদের সদস্যপদ স্থগিত করে দেওয়া হয়।
জায়েদ বলেন, তারপরেও তারা ইলিয়াস কাঞ্চনকে জবাব দিয়েছেন, কিন্তু নিপুণ সাক্ষরিত চিঠিতে তাদের নির্বাচিত কমিটি থেকে সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।
জায়েদ খান নিজের বিষয়ে বলেন, সামনে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে আমাকে ভোটে দাঁড়ানোর পথ বন্ধ করে দিতে তারা টার্গেট করে আমার সদস্যপদ স্থগিত করার চেষ্টা করছে। আমি যখন মুম্বাইয়ে তখন আমার বাসার ঠিকানায় চিঠি পাঠানো হয়। দুদিন আগে বাসার দারোয়ান আমাকে চিঠি দিয়েছে।
সদস্যপদ বাতিল প্রক্রিয়ার পূর্বে জায়েদ খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। জায়েদ খানের কারণ দর্শানোর চিঠিতে বলা হয়েছে, জায়েদ খান বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল ও গণমাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নিপুন আক্তারের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেন। শিল্পী সমিতি মনে করে, যা সমিতির সংগঠনের ৭(ক) ধারায় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। যা সমিতির সদস্য হিসেবে কাম্য নয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে শিল্পী সমিতি জায়েদ খানের সদস্য পদ স্থগিত করতে যাচ্ছে। তবে শাকিব খান অমিত হাসান সাক্ষরিত শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্র বলছে, কারো সদস্যপদ স্থগিতের পূর্বে যাচাই/বাছাই ও কার্য নির্বাহী পরিষদের দ্বারা পূণর্মূল্যায়ণ করতে হবে।
জায়েদ খান বলেন, কারণ দর্শানোর চিঠিতে বলা হয়েছে, ৭ এর ক ধারা মোতাবেক আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধারাটি এমন যে সংগঠনের উদ্দেশ্য পরিপন্থী ও বিরোধী কার্যক্রম করলে সদস্যপদ স্থগিত করা হবে। কিন্তু এটা পুরোপুরি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়ে মামলা এখনো বিচারাধীন। হাইকোর্ট আমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রায় দিয়েছে। এর বিরুদ্ধে নিপুণ আপিল করেছে, যে আপিলটি গ্রহণ করে শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। সেই বিচারাধীন পদ নিয়ে নিজেকে কিভাবে সাধারণ সম্পাদক দাবি করে তিনি আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
জায়েদ খান দাবি করেন, জোর করে সাধারণ সম্পদকের দায়িত্ব নেওয়া নিপুণের গঠনমূলক সমালোচনা করেছি বলেই তিনি আমার সমদ্যপদ বাতিলের পায়তারা করছে। এ বিষয়ে নিপুণ ও সাইমন সাদিক আগামী রবিবারের সভায় বিস্তারিত জানাবেন।