প্রায় ১৭ বছর পর গত বছর শেষের দিকে ফের মরণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের শরীরে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালের ন্যাশনাল ক্যানসার সেন্টারে।
সাবিনা ইয়াসমিনের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত বছরের শেষের দিকে কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের শরীরে কিছু জটিলতা ধরা পড়ে। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়, তার মুখগহ্বরে ফের ক্যানসারের সংক্রমণ ঘটেছে। পরে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।
ইতোমধ্যে সাবিনা ইয়াসমিনের মুখের অভ্যন্তরে একটি সার্জারি হয়েছে। শিগগিরই থেরাপি দেওয়া শুরু হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া চাওয়া হয়েছে শিল্পীর জন্য।
এর আগে, ২০০৭ সালে প্রথম ওরাল ক্যানসারে আক্রান্ত হন কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। তখন দেশে ও বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। এরপর থেকে নিয়মিত চেক-আপের মাধ্যমে ভালোই ছিলেন তিনি।
পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে সঙ্গীতের সঙ্গে আছেন সাবিনা ইয়াসমিন। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকের পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক গান কণ্ঠে তুলে সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস।
তিনি ১৪ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘একুশে পদক’ লাভ করেন সাবিনা ইয়াসমিন।
ছোট থেকেই সঙ্গীতের ভুবনে পদচারণা শুরু হলেও চলচ্চিত্রে পূর্ণ নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে সাবিনা ইয়াসমিনের আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৬৭ সালে; ‘আগুন নিয়ে খেলা’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। ১৯৭২ সালে ‘অবুঝ মন’ চলচ্চিত্রের ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’ গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি প্রথম জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
এই শিল্পীর উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘সব সখীরে পার করিতে’, ‘এই পৃথিবীর পরে’, ‘মন যদি ভেঙে যায়’, ‘ও আমার রসিয়া বন্ধুরে’, ‘জীবন মানেই যন্ত্রণা’, ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো’, ‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘ও আমার বাংলা মা’, ‘মাঝি নাও ছাড়িয়া দে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ’, ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ প্রভৃতি।