পথে প্রান্তরে ডেস্ক: যন্ত্রণাদায়ক চিৎকাররত এই নারীর মুখটি প্রাচীন মিশরের একটি হৃদয়বিদারক চিত্র। মমিটি ১৯৯৫ সালে লুক্সরের কাছে দেইর এল-বাহারিতে চালানো প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানের সময় উদ্ধার করা হয়। এখানে একটি নারীর মুখ খোলা ছিল যা তার যন্ত্রণাদায়ক চিৎকার বলে মনে করা হয়।
‘ভার্চুয়াল ব্যবচ্ছেদের’ জন্য সিটি স্ক্যান ব্যবহার করার পরে বিজ্ঞানীরা এখন এই ‘স্ক্রিমিং ওম্যান’ মমিটির এমন অবস্থার ব্যাখ্যা পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি তীব্র যন্ত্রণায় মারা গেছেন এবং মৃত্যুকালে তার পেশী শক্ত হয়ে যাওয়ার এমন বিরল এবং ভয়ার্ত রূপ দেখা গেছে। মৃত্যুকালে ওই নারীর ক্যাডাভ্যারিক স্প্যাজম হয়েছিল বলে গবেষণায় ওঠে আসে।
চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ফ্রন্টিয়ার্স ইন মেডিসিন জার্নালের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই প্রতিবেদনটি শুক্রবার (২ আগস্ট) প্রকাশ করে। এই গবেষণার নেতৃত্বদানকারী কায়রো ইউনিভার্সিটির রেডিওলজির অধ্যাপক সাহার সেলিম বলেন, ‘পরীক্ষায় স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, যে এই নারীর মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল প্রায় ৪৮ বছর, তিনি মেরুদণ্ডের হালকা বাত নিয়ে বেঁচে ছিলেন এবং কিছু দাঁত হারিয়েছিলেন।’
তার শরীর ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিল, প্রায় তিন হাজার ৫০০ বছর আগে প্রাচীন মিশরের নিউ কিংডম আমলের জুনিপার তেল এবং লোবান রজনের মতো দামী আমদানিকৃত উপাদান ব্যবহার করে সুবাসিত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিপ্লবের বাস্তব চিত্রকে স্কেচে রূপ দিলেন ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ
প্রাচীন মিশরীয়রা মনে করতেন, মৃত্যুর পর মৃতদেহ সংরক্ষণ করতে পারলে পরবর্তী জীবনে মর্যাদাপূর্ণ অস্তিত্ব নিয়ে ঠিকে থাকা যাবে। মমিকরণ প্রক্রিয়ার সময় হৃদযন্ত্রসহ অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলো সরিয়ে ফেলার প্রথা থাকলেও এই নারীর দেহ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেনি।
তিনি বলেন, ‘প্রাচীন মিশরে বিশেষ পেশার মানুষরা (এম্বলমার) সংরক্ষিত মৃতদেহের যত্ন নিতেন যাতে এটি মৃত্যু পরবর্তী জীবনেও সুন্দর দেখায়। তাই তারা হা করা চোয়াল রোধ করতে মৃতের মুখ বন্ধ করতে আগ্রহী ছিলেন।’