Search
Close this search box.

বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পেয়েও মিলছে না ভারতীয় ভিসা

স্টাফ রিপোর্টার: সদ্য এএইচসি পাস করেছেন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পাবনা জেলার রোহান। প্রকৌশল বিভাগে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। যথাযথ নিয়ম মেনে কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর প্রোগ্রামে আবেদন করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি আবেদনটি পর্যালোচনা করে তাকে ভর্তির যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে মেইলে অফার লেটার পাঠান।

এই অফার লেটারসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একাধিকবার ভারতীয় দূতাবাসে মেইল করার পরও কোনো ফিডব্যাক পাননি রোহান। পাশাপাশি ভিসা সেন্টারগুলোর স্লট না পেয়ে ভিসার জন্য আবেদনও করতে পারেননি এই শিক্ষার্থী। এখন পর্যন্ত ভিসা করতে না পেরে নিজের উচ্চশিক্ষা নিয়ে হতাশায় ভুগছেন তিনি।

এই শিক্ষার্থী জানান, ভিসা জটিলতায় কলকাতা যেতে না পারায় এখনো ভর্তি কনফার্ম করতে পারিনি। একাধিকবার দূতাবাসে গিয়ে কথা বলেছি, তাদের কথা অনুযায়ী কাগজপত্র মেইলে পাঠিয়েছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতোমধ্যে দু’বার ভর্তির তারিখ বাড়িয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ২২ নভেম্বর ভর্তির শেষ দিন, জানি না তার আগে ভিসা পাবো কি না।

এদিকে ভারত থেকে অফার লেটার পাওয়ায় বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হননি রোহান। ফলে তার উচ্চশিক্ষা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। শুধু রোহান নয়, এমন অভিযোগ প্রায় ডজনখানেক শিক্ষার্থীর। ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পেয়েও নির্দিষ্ট সময়ে ভিসা না পাওয়ায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে তৈরি হচ্ছে অনিশ্চয়তা। বর্ণা নামের ঝিনাইদহ জেলার এক শিক্ষার্থী গত সেপ্টেম্বর মাসে অফার লেটার পেয়েছেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এখন পর্যন্ত ভিসা জমা দেয়ার জন্য কোনো স্লট পাননি তিনি। ফলে ভিসা জটিলতায় আটকে গেছে তার উচ্চশিক্ষার আশা।

প্রায় সাড়ে তিনমাস চেষ্টা করে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ভিসা পেয়েছেন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষার্থী মো. সাবদার। চ্যানেল 24 অনালাইনকে তিনি বলেন, গত ৬ আগস্ট আমি ভিসার ফরম জমা দেয়ার এপয়েন্টমেন্ট নিয়েছিলাম। কিন্তু ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর সব ভিসা সেন্টার বন্ধ হয়ে গেল। এরপরে কার্যক্রম শুরু হলেও টাকা জমা দেয়ার ক্ষেত্রে বিড়ম্বনা তৈরি হয়। আর টাকা জমা না দিলে আমি কোনো ভিসা সেন্টারে ফরম জমা দিতে পারবো না। দূতাবাস থেকে বলা হচ্ছে স্লট খোলা আছে পেমেন্ট করা যাবে, কিন্তু বাস্তবে মাত্র ৩/৪ মিনিটের জন্য স্লট খোলা হচ্ছে। এই সময়ে সার্ভারে এত পরিমাণ হিট হয় যে, সবার পক্ষে টাকা জমা দেয়া কষ্টকর। সবকিছু মিলিয়ে অনেক কষ্ট করে প্রায় সাড়ে তিন মাস ভিসা পেয়েছি। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারতে গিয়ে ভর্তি হতে পারবো।

শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তির বিষয়ে ভারতীয় দূতাবাসের শিক্ষা উইংয়ের প্রধান বলয় চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হয় একটি প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের সঙ্গে ।

তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের ডেকে সাক্ষাৎকার নিয়ে তাদেরকে স্লট দেয়ার ব্যবস্থা করছি। পরে কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই তারা ভিসার কাগজপত্র জমা দিচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টা সহজে করার, এখন পর্যন্ত আমরা আপ টু ডেট আছি। মূলত ৫ তারিখের পরিস্থিতির কারণে কিছু গ্যাপ হয়েছিল, আমরা সেটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এবং যে গ্যাপ হয়েছে তা অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে ব্যাল্যান্স করতে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জরুরি ভিসা ছাড়া অন্যান্য ভিসা বন্ধ থাকায় অনেকে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য ভুয়া কাগজপত্র জমা করছেন। এক্ষেত্রে আমরা যাচাই-বাছাই করে সাক্ষাৎকার নিয়ে অনেথটিক আবেদনগুলোর জন্য স্লট দিচ্ছি। বিষয়টা কিছুটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ