পথে প্রান্তরে ডেস্ক : আজমির দরগাহের খাদেম সালমান চিশতী ঘোষনা করেন, ‘নূপুর শর্মার মাথা কেটে আনতে পারলে আমার বাড়ি দিয়ে দেব!’ এক ভিডিওতে রাজস্থানের আজমিরের হজরত খাজা মঈনুদ্দিন হাসান চিশতীর দরগাহের এ খাদেম এমন ঘোষনা দেওয়ার পর তোলপাড় লেগে যায়। দ্রুতই তাকে গ্রেফতারও করা হয়।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরই আজমির শহরের আলওয়ার গেট থানায় সালমান চিশতীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খাদেমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্প্রতি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)–কে অবমাননাকারী মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ার পর বিজেপির মুখপাত্র পদ থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত হন নূপুর শর্মা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে ভারতের বিজেপির বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে ওই খাদিম রীতিমতো হুমকি দেন। তিনি রীতিমতো কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, ‘আমি আগের মতো আর নেই। নাহলে আমি এই কথা বলতাম না। আমার জন্মদাত্রী মা ও আমার সন্তানদের নামে শপথ করে বলছি, আমি নূপুর শর্মাকে সামনে পেলে প্রকাশ্যে গুলি করে মারতাম। আমি আজ বুক বাজিয়ে ঘোষণা করছি, যে নূপুর শর্মার মাথা কেটে আনতে পারবে, হু উইল গিভ মি হার হেড, আমি তাকে আমার পুরো বাড়িটাই লিখে দিয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে যাব।’
সালমান আরও বলেন, ‘এই ঐশ্বর্য এই আরাম সবই নবীর দেওয়া। তাঁরই যদি সম্মান না থাকে তাহলে আমাদের কিসের সম্মান? বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসো সবাই। আমি আজও কাউকে কেটে ফেলার ক্ষমতা রাখি।’ তিনি নিজেকে খাজার প্রকৃত সৈনিক দাবি করেছেন। চোখ মুছতে মুছতে দরগাহের ওই খাদিম বলেন, ‘এদিকে তোমাদের নবীর উপর একজন প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল, তোমরা সবাই ডুবে মরো।’
হজরত খাজা মঈনুদ্দিন হাসান চিশতীর দরগাহের খাদিম সালমান চিশতী দরগা থানা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে ১৩টির বেশি গুরুতর অভিযোগের মামলা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে খুন ও খুনের চেষ্টার মতো অভিযোগও। নূপুর শর্মার মন্তব্যের প্রতিবাদে গত ১৭ জুন আজমির দরগার খাদিম গওহর চিশতী দরগাহের বাইরে মৌন মিছিলের আয়োজন করা হয়। সেই মিছিলেই উত্তেজক বক্তৃতা দেন সালমান। শুধু তাই নয়, ওই মিছিলে ‘গুস্তাখ ই রসূল কি হ্যায় সাজা, সর তন সে জুদা’ স্লোগান পর্যন্ত উঠেছিল । তারপর এদিন আবারও সালমান চিশতীর উস্কানিমূলক ভিডিও সামনে এল।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, আজমির দরগাহ শরিফের দেওয়ান জয়নুল আবেদিন আলী খানের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে ভিডিওটির নিন্দা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, মাজার হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জায়গা। ভিডিওটিতে খাদেম যে মত দিয়েছেন, তাকে দরগাহর বার্তা বলে বিবেচনা করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, এটি ব্যক্তিগত মতামত, যা প্রচণ্ড রকমে নিন্দনীয়।