আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মরুর দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৭ বছরে এমন বৃষ্টি, বন্যা হয়নি। এ বন্যায় এরইমধ্যে ৭ প্রবাসী নিহতও হয়েছে। দুই দিনের প্রবল বর্ষণে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ২৫৫.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস।
ভয়ংকর পরিস্থিতি আরবে। শিশুদের কাঁধে করে জল পেরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। হঠাৎ-বন্যার জেরে বহু মানুষ হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন। বহু জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। বহু সড়কেই জলস্রোতে ভেসে গিয়েছে গাড়ি। মানুষজন আটকে পড়েছেন। দুর্গতদের সাহায্যের কাজে নেমে পড়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। এটিকে এক ধরনের ফ্ল্যাশ ফ্লাডের গোত্রে ফেলছেন সে দেশের আবহাওয়াবিদেরা। তবে তাঁরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে এমন বৃষ্টি বা বৃষ্টিজনিত বন্যা আরবে হয়নি। বিশেষত জুলাই মাসে এই পরিমাণ বৃষ্টি এখানে কখনও হয়নি। ২৫৫.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে গত দুদিনে! বলা হচ্ছে, গত ২৭ বছরে এমন বৃষ্টি হয়নি আরবে!
সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক টুইটার ভিডিওবার্তায় জানায়, সাত জন এশীয় প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। আরও যারা আটকা পড়েছেন তাদেরকে উদ্ধারে অভিযান চলছে। আমিরাতের আবহাওয়া দপ্তর জানায়, গত বুধবার থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হয়েছে টানা বর্ষণ। আমিরাতের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলীয় তিন প্রশাসনিক অঞ্চল (এমিরেত) শারজাহ, রাস আল খাইমাহ ও ফুজাইরায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত দুই দিনের দুর্যোগে এই তিন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। তবে, দেশটির বিভিন্ন শহর বন্যার কবলে পড়লেও দুবাই ও রাজধানী আবুধাবিতে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কম বলে জানা গেছে।
বন্যাদুর্গত এলাকার লোকজনকে আশ্রয় দিতে শারজাহ, রাস আল খাইমাহ ও ফুজাইরায় ২০ টি হোটেল প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু যদি তাতে না কুলায়, সেজন্য অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে একাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা রেখেছে আমিরাতের সরকার। আমিরাতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বৃষ্ট ও বন্যার বিভিন্ন ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, বন্যার পানিতে গাড়ি ভেসে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আরব আমিরাতের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের কয়েকটি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করেছেন বিভাগের কর্মীরা। তারা আরও জানান, বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানি ও শুষ্ক খাবার পাঠানো হচ্ছে এবং পানিবাহিত রোগ যেন এসব এলাকায় ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত মরু অঞ্চল হওয়ায় সারা বছরই সেখানকার আবহাওয়া শুষ্ক থাকে এবং বৃষ্টিপাতও ঘটে খুব কম। সেই হিসেবে বন্যার ঘটনা দেশটিতে বিরল।