আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বয়স্ক মানুষদের জন্য ‘বৃদ্ধাশ্রম’ খুবই পরিচিত নাম। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সের জন্য সময় জমা রাখা ও খরচের জন্য ‘টাইম ব্যাংক’ নতুনভাবে পরিচিত পাচ্ছে। তরুণ বয়সে বৃদ্ধ মানুষদের দেখভাল করে, সময় দিয়ে, ‘টাইম ব্যাংকে’ সময় জমা রাখা যায়। আর সেই সময় বৃদ্ধ বয়সে নিজের ইচ্ছে মত খরচ করা যায়। বৃদ্ধ বয়সে যখন কেউ দেখার থাকে না, তখন তরুণ বয়সে বৃদ্ধদের দেখভাল করে যে সময় ‘টাইম ব্যাংকে’ জমা হয়, সেই সময় দিয়ে তরুণদের কাছ থেকে নিজেকে দেখভালের জন্য সময় নেওয়া যায়।
হতভাগ করা বিষয়ই। তবে চীন ও সুইজারল্যান্ডে এমন ‘টাইম ব্যাংক’ই চলছে। টাকা জমিয়ে রাখার জন্য সব দেশেই বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে। এমনকি, প্রয়োজনীয় রক্তের জন্য ব্লাড ব্যাংকও আছে। ‘টাইম ব্যাংক’ নামে সময় জমিয়ে রাখার ব্যাংকও আছে। ‘সময় ব্যাঙ্ক’এ মানুষ চাইলেই খুব সহজে সময় জমিয়ে রাখতে পারবে।
এই ব্যাংকে কোনও মানুষ শুধু সময় জমিয়েই রাখতে পারবে না, প্রয়োজন হলে তা খরচও করতে পারবে। আসলে এক বিশেষ উদ্দেশেই চালু করা হয়েছে এই সময় ব্যাংক। ষাটোর্ধ্ব মানুষদের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে এই ‘সময় ব্যাঙ্ক’। সময় জমিয়ে রাখার অর্থ হচ্ছে, বয়স্ক মানুষদের সেবা করে যতটা সময় ব্যয় করবেন, ততটা সময় আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হবে। আপনি যখন নিজে ষাটের কোঠা পার করবেন, তখন জমানো সময় ব্যয় করতে পারবেন নিজের জন্য।
ভাবছেন, জমিয়ে রাখা সময় ব্যয় করবেন কীভাবে? আপনার বয়স বাড়লে অন্য এক জন স্বেচ্ছাসেবককে দেখাশুনার দায়িত্ব দেয়া হবে। আপনি তরুণ অবস্থায় যেভাবে কোনও এক বৃদ্ধের সেবা করেছিলেন, আপনিও ঠিক একইভাবে বৃদ্ধ অবস্থায় বিশেষ প্রয়োজনে একজন তরুণ বা তরুণীর সেবা পাবেন।
দ্য প্রেস ডেমক্রেট সূত্র অনুযায়ী, চিনের রাজধানী বেইজিংয়েও এই সময় জমানোর সুবিধা আছে। তবে সেখানে নিয়ম একটু আলাদা বেইজিংয়ে বৃদ্ধ এবং অসহায় ব্যক্তিদের সেবা করার জন্য এক জন স্বেচ্ছাসেবক যুবক বা যুবতী ঘণ্টা প্রতি একটি করে নির্দিষ্ট মূল্যের কয়েন আয় করতে পারে। বৃদ্ধদের সেবা করে কয়েন জমানো ব্যক্তির বয়স ষাট বছর অতিক্রম করলেই জমানো কয়েন খরচ করতে পারবেন। এই জমানো মূল্য খরচ করা যেতে পারে দুইটি উপায়ে। কোনও ব্যক্তি চাইলে এই জমানো বিশেষ অর্থ তার কোনও আত্মীয়স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবকে দান করতে পারবে। আবার কেউ চাইলে নিজের জন্যও ব্যবহার করতে পারবে এই কয়েন।
এই কয়েনের সাহায্যে এক ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় কিনতে পারেন। অর্থাৎ সেই ব্যক্তি চাইলে তরুণ কোনও স্বেচ্ছাসেবককে তার সেবার কাজে লাগাতে পারবেন নিজের বৃদ্ধ বয়সে। বৃদ্ধদের সেবা করে এই রকম ১০ হাজার কয়েন জমাতে পারলে এক ব্যক্তি সরকারি খরচে সব সুযোগ-সুবিধাসহ সেবাকেন্দ্রে বাকি জীবন আরাম করে কাটাতে পারবেন।