Search
Close this search box.

ট্রাম্পের বাড়ি থেকে গোপন নথি জব্দ

ট্রাম্পের বাড়ি থেকে গোপন নথি জব্দ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গোপন নথি জব্দ করা হয়েছে। ১১ সেট অতি গোপন নথি জব্দ করেছে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)। ট্রাম্পের পাম বিচের মার-এ-লাগো রিসোর্টে তল্লাশি চালিয়ে নথিগুলো উদ্ধার করা হয়।

 

ট্রাম্পের বাড়ি থেকে গোপন নথি জব্দ
ডোনাল্ড ট্রাম্প

 

বিবিসির খবরে বলা হয়, নথিগুলোর একটি তালিকা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে একজন বিচারক সাত পৃষ্ঠার নথি মুক্ত করেন। এরপর নথিগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হয়। নথি জব্দের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি কোনো অপরাধ করেননি। নথিগুলোতে গোপন কিছুই নেই। গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ তল্লাশি পরোয়ানার বিষয়বস্তু প্রকাশ করতে বিচারককে অনুরোধ জানান। ওই পরোয়ানার ভিত্তিতেই গত সোমবার (৮ আগস্ট) মার-এ-লাগোতে তল্লাশি চালায় এফবিআই।

এরআগে ফ্লোরিডার রিসোর্টে এফবিআই তল্লাশি চালানোয় ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ২০২০ সালে পরাজিত হওয়ার পর ১৫টি বাক্সে সরকারি নথিপত্র ফ্লোরিডাতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এমনকী সেই নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে। এফবিআই এজেন্টেদের এই অভিযানের মধ্যমে ‘অভব্যতা’ খুঁজে পাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে বিবৃতি জারি করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের দেশে অন্ধকার নেমে এসেছে। ফ্লোরিডার পাম বিচে আমার সুন্দর বাড়ি মার-এ-লাগো বর্তমানে এফবিআই এজেন্টদের একটি বড় দলের দখলে রয়েছে। তারা আমার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে এই অভব্য আচরণ করা হচ্ছে। চরম বাম মনোভাবাপন্ন ডেমোক্র্যাটরা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।’

 

ট্রাম্পের বাড়ি থেকে গোপন নথি জব্দ
 গোপন নথি টয়লেটে ফ্লাশ করতেন ট্রাম্প

 

২০২৪ সালে ট্রাম্প তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে পারেন এই খবর আসার পরই মূলত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগের তদন্ত গতি পায়। তবে ফ্লোরিডা রিসোর্ট অভিযানের সময় ট্রাম্প তার নিউইয়র্কের বাড়িতে ছিলেন। ট্রাম্পের দাবি, তিনি সব প্রাসঙ্গিক সরকারি সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন। বিচার বিভাগের অধীনে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির সাথে যুক্ত দুটি সক্রিয় তদন্ত চলছে। একটি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বাতিল করার প্রচেষ্টা এবং অন্যটি ক্লাসিফায়েড নথি সরানোর সাথে জড়িত। সোমবার সকালে তল্লাশি শুরু হয় এবং গোয়েন্দারা ট্রাম্পের অফিস এবং ব্যক্তিগত কোয়ার্টারে হানা দেন। সম্ভবত মার্কিন বিচার বিভাগের তদন্তের কারণ তারা অনুমান করছেন সরকারি রেকর্ড ফ্লোরিডা রিসোর্টে সরিয়েছেন ট্রাম্প। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে মার-এ-লাগো থেকে ন্যাশনাল আর্কাইভসের হোয়াইট হাউসের রেকর্ড পুনরুদ্ধার করার পরে সোমবার এফবিআইকে যাচাই করতে হয়েছিল যে সেখানে আর কিছু পড়ে আছে কিনা । ট্রাম্পের ছেলে, এরিক, ফক্স হোস্ট শন হ্যানিটিকে একথা জানান।

ট্রাম্পের অ্যাটর্নি ক্রিস্টিনা বব বলেছেন, এফবিআই নথি জব্দ করেছে। বব বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার আইনি দল প্রতিটি পদক্ষেপে এফবিআই এবং ডিওজে কর্মকর্তাদের সাথে সহযোগিতা করেছেন। এফবিআই একটি অঘোষিত অভিযান পরিচালনা করেছে এবং কাগজ জব্দ করেছে।’

ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন জাতীয় সংরক্ষণাগার এবং রেকর্ডস প্রশাসন কংগ্রেসকে অবহিত করার পরে তদন্তটি সামনে আসে। তারা ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়ি থেকে হোয়াইট হাউসের নথির প্রায় ১৫ টি বাক্স উদ্ধার করেছে। যার মধ্যে কয়েকটিতে গোপন নথি রয়েছে। এর আগে জুনের গোড়ার দিকে কয়েকজন তদন্তকারী হোয়াইট হাউসে সফর করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্পের সময়কার কোনো নথি সরানো হয়েছিল কিনা সেই বিষয়ে তারা তদন্ত করছিলেন।

গোপন নথি টয়লেটে ফ্লাশ করতেন ট্রাম্প, এটাও তখন সবার নজরে আসে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসে ছিলেন, তখনকার সময়ের কিছু নতুন ছবি প্রকাশিত হয়েছে। ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প সম্ভবত কিছু গুরুত্বপূর্ণ অথবা গোপন নথিপত্র টয়লেটে ফ্লাশ করে দিয়েছেন। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদক ম্যাগি হ্যাবারম্যান এই ছবিগুলো তার নতুন বই ‘কনফিডেন্স ম্যান’-এ প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। ম্যাগি হ্যাবারম্যান গণমাধ্যমকে জানান, সদ্য প্রকাশিত ২টি ছবির একটি হোয়াইট হাউসের টয়লেট থেকে তোলা এবং আরেকটি বিদেশ সফরের সময় তোলা, যা হোয়াইট হাউস সূত্রে তিনি পেয়েছেন। ছবিগুলো এর আগে মার্কিন নিউজ ওয়েবসাইট অ্যাক্সিওসে প্রকাশিত হয়েছিল।

এর আগে সিএনএনের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ট্রাম্প অনেক সময় অফিসিয়াল নথিপত্র পড়ার পর ছিঁড়ে ফেলতেন। তিনি হোয়াইট হাউসে থাকার সময়ও গুরুত্বপূর্ণ নথি টয়লেটে ফেলে ফ্লাশ করে দিতেন। টয়লেটের পাইপে সেসব কাগজ আটকে গেলে তিনি মিস্ত্রি ডেকে তা ঠিক করে নিতে বলতেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। অবশেষে জানা গেল, ১১ সেট অতি গোপন নথি জব্দ করেছে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ