Search
Close this search box.

আজারবাইজানের সঙ্গে সংঘর্ষে আর্মেনিয়ার ৪৯ সেনা নিহত

আজারবাইজানের সঙ্গে সংঘর্ষে আর্মেনিয়ার ৪৯ সেনা নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক – আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানে আবার নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার আর্মেনিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই সংঘাতে তাদের কমপক্ষে ৪৯ সেনা নিহত হয়েছে। আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে বেশ কিছু শহরে কামান দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেছেন, আজারবাইজানের সঙ্গে সোমবার রাতভর সংঘর্ষে তার দেশের ৪৯ জন সেনাসদস্য নিহত হয়েছে।

আর্মেনিয়ার পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, রাতভর আর্মেনিয়ার অবস্থানে হামলা চালানো হয়েছে এবং লড়াই অব্যাহত রয়েছে। সোমবার রাতের এই সংঘাতের মধ্য দিয়ে নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে দুই দেশের দীর্ঘদিনের বিরোধ নতুন করে সামনে এলো। ২০২০ সালে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে বিরোধপূর্ণ নাগোরনো-কারাবাখের অধিকাংশ এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় আজারবাইজান।

আর্মেনিয়া বলছে, মঙ্গলবার সকালে জেরমুক, গোরিস, কাপানসহ বেশ কিছু শহরে হামলা চালানো হয়েছে। আজারবাইজানের এই হামলাকে ‘বড় ধরনের উস্কানি’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এর পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছে আর্মেনিয়া। এদিকে আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ বলছে, আর্মেনিয়া আগে হামলা চালিয়েছে। অপরদিকে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বিভিন্ন শহরে আক্রমণ করার জন্য আজারবাইজানকেই দায়ী করেছেন। তার দাবি, তারা নাগারনো-কারাবাখের বিষয়ে একমত হয়নি বলেই এই হামলা চালানো হয়েছে।

সোমবারের সংঘাতের পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান। এছাড়া ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি।

নতুন করে সংঘর্ষের জন্য পরস্পরকে দায়ী করে আসছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। আজেরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কয়েকটি অবস্থানে গুলিবর্ষণ করেছে আর্মেনীয় সেনারা। হামলায় মর্টারসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলে সেনা ও সামরিক অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সূত্র-রয়টার্স।

আজারবাইজানের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, তাদের সীমান্তে আর্মেনীয় সেনারা গুপ্তচরবৃত্তি শুরু করেছে, অস্ত্র মোতায়েন করেছে এবং সোমবার রাতে খনন অভিযান চালিয়েছে। এর বিপরীতে আজেরি বাহিনীর পদক্ষেপ ছিল সম্পূর্ণভাবে স্থানীয় ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করে। বিপরীতে আর্মেনিয়ার অভিযোগ ছিল, বিতর্কিত এলাকায় আজারবাইজানই প্রথম অভিযান চালিয়েছে। রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর টহলদারী এলাকায় আজারবাইজানের সেনারা ঢুকে পড়লে তাদের বাধা দেওয়া হয়।

আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তুমুল গোলাগুলি চলমান রয়েছে। আজারবাইজানের বড় ধরনের উসকানির পর এই গোলাগুলি শুরু হয়েছে। আর্মেনীয় বাহিনীও পাল্টা জবাব দিচ্ছে।

১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকার সময় নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ে মধ্যে প্রথম দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়। ওই সময় আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূখণ্ড বলে স্বীকৃত অঞ্চলটি দখল করে আর্মেনিয়ার সেনাবাহিনী। অঞ্চলটিতে বিপুল সংখ্যক আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত মানুষের বসবাস। নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলটি আজারবাইজানের মধ্যে অবস্থিত হলেও ১৯৯৪ সালে যুদ্ধের পর থেকে সেটি জাতিগত আর্মেনীয়দের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০২০ সালের যুদ্ধে অঞ্চলটি ফের দখলে নেয় আজারি সৈন্যরা। ছয় সপ্তাহের ওই যুদ্ধে সাড়ে ছয় হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। পরে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। চুক্তি মোতাবেক নাগোরনো-কারাবাখে রাশিয়ার দুই হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ