আন্তর্জাতিক ডেস্ক – প্রথমবারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। টেলিফোনে কথা হয়েছে। ইউক্রেনে চালানো রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযানের পর প্রথমবার এ দুই নেতা কথা বললেন। চীনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। বুধবার তাদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী এই ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এই ফোনালাপকে ‘দীর্ঘ ও অর্থপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন। খবর আলজাজিরার।
এক টুইটে জেলেনস্কি বলেন, এই ফোনালাপ এবং সেইসঙ্গে চীনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে শক্তিশালী প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে আমি মনে করি। এই ফোনালাপের পর বেইজিং বলছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের ‘রাজনৈতিক সমাধান’ করতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে কিয়েভে একজন দূত পাঠাতে চায় চীন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেইজিংয়ের আসল উদ্দেশ্য হলো যুদ্ধরত দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনার সুযোগ তৈরি করা। এ ছাড়া এই সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজতে রাশিয়ায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন এমন একজন কূটনীতিককে দূত করে ইউক্রেনে পাঠানো হবে।
এর আগে গত মার্চে মস্কো সফর করেন শি জিনপিং। ওই সফরের পর শি ও জেলেনস্কি নিজেদের মধ্যে কথা বলার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সেই ধারাবাহিকতায়ই এ দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপটি অনুষ্ঠিত হলো।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রতি চীনের ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে এবং রাশিয়ার অধিগ্রহণ ইউক্রেন ভূখণ্ডে ভাঙন ধরাতে পারবে না—কিয়েভের এমন দাবির প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন প্রকাশ পেয়েছে। এ ছাড়া বিবৃতিতে ইউক্রেনের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে যে বেইজিং মূল্য দেয়, তাও স্পষ্ট হয়েছে।
খবরে জানানো হয়, চীনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটি এখন ইউক্রেনে সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, কিয়েভ যুক্তিসংগত সব উদ্যোগকেই প্রত্যাখ্যান করে আসছে এবং অবাস্তব দাবি তুলে আল্টিমেটাম দিয়ে যাচ্ছে। এই ফোনালাপের পর চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেইজিং সবসময়ই শান্তির পক্ষে। সংলাপ ও আলোচনাই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ। জেলেনস্কি টুইটারে এক বার্তায় বলেছেন, এই ফোনালাপ ও বেইজিংয়ে ইউক্রেনের একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের গতি জোরালো করবে। ইউক্রেনে রুশ অভিযানের ব্যাপারে চীন বরাবরই নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকার দাবি করেছে।