স্টাফ রিপোর্টার: কাজে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় সৌদি আরবে বাংলাদেশি তিন যুবক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩) দুপুরে আল আলিফ শহরে স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ২নং আলগী দূর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কমলাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন এর ছেলে মোহাম্মদ মোস্তফা গাজী রিফাত। সাড়ে চার বছর প্রবাসে। কিছুদিন পূর্বে একমাত্র বোনের বিয়ে হয়েছে। তাকে দেখতে ঈদের পর বাড়িতে আসার কথা। কিন্তু ঈদের পর রিফাত আসলেও জীবিত নয় আসবে তার মরদেহ এতে শোকে কাতর বাবা। সড়ক দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিয়েছে তার আদরের সন্তানের।
একই উপজেলার ৩নং দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের চরভাঙ্গা গ্রামের ইসমাইল ছৈয়ালের ছোট ছেলে সাব্বির। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মেজ ছেলে সে। তিন বছর প্রবাসী হলেও অধিকাংশ সময় ছিল না কাজ। তাই আয় রোজগার ছিল না তেমন। তবুও মাকে ফোন করে বলেছিল ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিতে। টাকা পাঠাবে সে । তবে ঈদে কোরবানির টাকা না আসলেও এসেছে ছেলের মৃত্যুর সংবাদ। এমন সংবাদে আহাজারি করছে নিহতের গর্ভধারানী মা ও আত্মীয় স্বজনরা।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১২নং চরদুখিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বিষকাটালী এলাকার জামাল চৌকিদার এর ছেলে সবুজ চৌকিদার। ১৮ বছর প্রবাসে। ১০-১২ দিন পূর্বে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে গেছেন সৌদি আরব। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনিও। তার এমন মৃত্যুতে পাগলের মত আহাজারী করছেন তার বাবা-মাও। তিন প্রবাসীর মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
সাব্বির আর রিফাতকে সৌদিতে কাজের জন্য নিয়েছেন সবুজ চৌকিদার। তিনি তাদের নিয়ে আপিপ শহর ও আশপাশের এলাকায় ভবন নির্মাণের কাজ করতেন। নিজেদের গাড়িতে তারা কাজে আসা-যাওয়া করতেন। গাড়ির চালক ছিলেন সবুজ। দুর্ঘটনার সময়ও গাড়ির চালাচ্ছিলেন সবুজ। এসব তথ্য জানালেন সবুজের বাবা জামাল চৌকিদার।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি সময় ৪টায় সবুজসহ ৩ জনের দুর্ঘটনার খবর পান। রাত ১০টায় সেখানে অবস্থানরত স্বজনদের মাধ্যমে জানতে পারেন দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে নিহত তিন যুবকের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সর্বোচ্চ আন্তরিকতা আশা করছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।