সিরিয়ায় ৫০ বছরের আসাদ শাসনের অবসান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ আজ রোববার ভোরে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে দামেস্ক থেকে বিমানে পালিয়েছেন। এরই মধ্যদিয়ে সিরিয়ায় আসাদ যুগের ৫০ বছরের শাসনের অবসান হলো। সিরিয়ার সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, ‘আসাদ জমানার অবসান হলো’।  স্কাই নিউজ, জেরুজালেম পোস্ট এবং ওয়াশিংটন টাইমস এই খবর জানিয়েছে।

সিরিয়ার সেনাবাহিনীর কমান্ডার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘বিদ্রোহীদের ঝটিকা অভিযানের ফলে সেনাবাহিনী আসাদের বাসভবন ছেড়ে চলে যাওয়ার মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং এরই সাথে তার ২৪ বছরের স্বৈরশাসনের শাসনের অবসান হয়েছে’।

এদিকে বিদ্রোহীরা বাস্তুচ্যুতদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘মুক্ত স্বাধীন সিরিয়া আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আপনারা নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে আসুন’।

বিদ্রোহীরা আরও বলেছে, তারা তৃতীয় বৃহত্তম শহর পুরোপুরি দখলে নেয়ার পর চারিদিক থেকে দামেস্ক ঘিরে ফেলে। এই সময় তারা দামেস্কতে সেনাবাহিনীর কোনো চিহ্নও দেখতে পাননি।

একই সময়ে বিদেশে অবস্থানরত সিরিয়ার বিরোধী গ্রুপের প্রধান হাদি আল বাহরা জানিয়েছেন ‘সিরিয়া এখন বাশার মুক্ত হলো’।

স্কাই নিউজ জানিয়েছে, বিদ্রোহী যোদ্ধারা একদিনের যুদ্ধের পর রোববার সকালে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর হোমস দখলে নিয়েছে। শহর থেকে আসাদ বাহিনীর সেনা প্রত্যাহারের পর হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় নেমে এসে আসাদ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

তারা ‘আসাদ পালিয়ে গেছে, হোমস মুক্ত’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক’ বলে গগনবিদারী স্লোগান দিতে থাকে।

জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ গাড়িতে করে এবং পায়ে হেঁটে দামেস্কের প্রধান চত্বরে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

এদিকে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিমান দামেস্ক ছেড়ে গেছে। বিমানটিতে সম্ভবত আসাদ ছিলেন। বিমানটি ছাড়ার সময় সেখানে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিদ্রোহীরা সেদনায়ায় বড় একটি কারাগার থেকে বহু বন্দীকে ছেড়ে দেয়। এরপর বন্দীরা জনতার সঙ্গে দামেস্ক জয়ের উদযাপন শুরু করে।

বিদ্রোহীগ্রুপগুলো সিরিয়ার প্রধান প্রধান সড়কের মোড়ে স্থাপিত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রয়াত পিতা সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল আসাদের মূর্তি ভেঙে চুরমার করে ফেলে।

বিদ্রোহীরা বলেছে, ‘আমরা সিরিয়ার জনগণের সঙ্গে আমাদের বন্দিদের শিকল মুক্ত করার এবং সেদনায়া কারাগারে অন্যায়ের যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করার উৎসব উদযাপন করছি’।

এদিকে সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ গাজি জালালি বলেছেন, জনগণের পছন্দের যে কোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তত। তিনি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমি পালিয়ে যায়নি, বাড়িতেই আছি। কারণ, এটা আমার দেশ। আমি শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত’।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি নিয়মিত প্রতিদিন সকালে অফিস করেন। তিনি সিরিয়ার নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করার আহ্বান জানান।

এদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আজ অথবা আগামীকাল যে কোনো সময় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ