এর আগে একইদিন ট্রাম্প গাজার ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দিয়ে সবাইকে স্তম্ভিত করে দেন তিনি।
তার এই ঘোষণায় ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলা সংঘাত নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সঙ্গে নিয়ে করা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প তার এই আশ্চর্য পরিকল্পনা তুলে ধরেন; তবে এর সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা প্রস্তাব করেননি তিনি।
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ভঙ্গুর একটি যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্ব পালিত হচ্ছে। এই ছিটমহলকে ‘ধ্বংস হয়ে যাওয়া এলাকা’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
রয়টার্স লিখেছে, ট্রাম্প আশা করতে পারেন মিত্র এবং শত্রুরা একইরকমভাবে গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো দখলদারিত্বের প্রবল বিরোধিতা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র গাজা ভূখণ্ডের দখল নেবে আর আমরা এটিকে নিয়ে একটি কাজও করবো। আমরা এটির মালিক হয়ে সেখানে থাকা বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত সব বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র ধ্বংস করার দায়িত্বপালন করবো।
“যদি এটা প্রয়োজনীয় হয়, আমরা তা করবো, আমরা খণ্ডটি দখল করতে যাচ্ছি, আমরা সেটির উন্নয়ন ঘটাতে যাচ্ছি, হাজার হাজার চাকরি তৈরি হবে আর এটি এমন কিছু হবে যার জন্য পুরো মধ্যপ্রাচ্য অত্যন্ত গর্বিত হতে পারে।
“আমি একটি দীর্ঘমেয়াদি মালিকানার অবস্থান দেখতে পাচ্ছি আর এটি মধ্যপ্রাচ্যের ওই অংশে ব্যাপক স্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে।”
তিনি জানান, তিনি এ ধারণা নিয়ে ওই অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন আর তারা এতে সমর্থন জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘দখলকৃত’ গাজায় কারা বসবাস করবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটি ‘বিশ্বের মানুষের’ বাড়িতে পরিণত হতে পারে।
কীভাবে এবং কোন কর্তৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির আবাস গাজা দখল করে এটি অধিকার করতে পারে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো জবাব দেননি তিনি।
সাগর তীরবর্তী এই ভূণ্ডটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘ সহিংসতার ইতিহাস আছে। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনগুলো ধারাবাহিকভাবে এই বিপজ্জনক ভূখণ্ডে মার্কিন সেনা মোতায়েন এড়িয়ে গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প কয়েকবার নেতানিয়াহুকে তার ডাক নাম ‘বিবি’ উল্লেখ করে কথা বলেন। নেতানিয়াহু ট্রাম্পের এই প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় নিজেকে জড়াননি। শুধু একটি ‘নতুন পন্থায়’ চেষ্টা করার জন্য ট্রাম্পের প্রশংসা করেন।
ইসরায়েলি নেতা বলেন, “ট্রাম্প নতুন ধারণা নিয়ে পুরোপুরি অন্যভাবে চিন্তা করছেন। তিনি প্রচলিত চিন্তাভাবনাকে থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা প্রদর্শন করছেন।”
কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন, ট্রাম্প ভবিষ্যৎ আলোচনার মাত্রা ঠিক করতে কখনো কখনো বৈশ্বিক বিষয়ে একটি চরম অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। প্রথম মেয়াদেও তিনি এমন কিছু চরম বৈদেশিক নীতির কথা উচ্চারণ করেছিলেন যার অনেকগুলোই কখনোই বাস্তবায়ন করেননি।