স্টাফ রির্পোটার- রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের কিংফিশার রেস্টুরেন্ট ও বারে অভিযান পরিচালনা ৬ হাজার বোতল বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ ও বিয়ার উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ । বৃহস্পতিবার রাতে (ডিএমপির) গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিাযানে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। তারা বেশির ভাগই সেই বারের কর্মচারী। এ নিয়ে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মাদক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হুারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, সেখান থেকে পাঁচ হাজার ৪০০ পিস বিয়ার এবং প্রায় ৬০০-এর মতো বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ উদ্ধার করা হয়। ওই ভবনের ছয়, সাত ও আট তলা থেকে এসব মদ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এসব মদের বৈধ কোনও কাগজপত্র গোয়েন্দাদের দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। যদি আমদানি করা হয়, তাহলে কাস্টমসের কাগজপত্র থাকবে। কাস্টমস থেকে এসেছে নাকি পর্যটন থেকে এসেছে, কোনও ধরনের কাগজ তারা দেখাতে পারেনি।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- আবু সালেহ (৩৮), মো. মোহন (২১), মুকুল (৪০), মো. সিব্বির আহম্মেদ (২৫), রাসেল (২৪), আবুল কাসেম মিন্টু (৪২), নাহিদ দারিয়া (২০), শান্ত ইসলাম (২২), আলিম উদ্দিন (২৪), জালাল উদ্দিন (৩২), সাজ্জাদ হোসেন (২৭), রহমত আলী (২৫), খালেক সাইফুল্লাহ (২৭), ইমরান (৩৯), মো. সাহান শেখ (২৪), মো. মোফাজ্জেল (৫০), ওবায়েদ মজুমদার (২৪), ইবাদত খান (৩২), রাইস উদ্দিন (২৫), রায়হান (২১), মো. রুবেল (২৮), রিফাত (১৮), ফয়সাল (২২), শরিফুল ইসলাম (১৮), রাসেল (১৮), জাহিদ হাসান (১৮), রওশন জামিল রাসেল (৩০), হুমায়ুন কবির (২৫), তোফাজ্জেল হোসেন (২০), মো. রিয়াদ হোসেন (২৪), আল আমিন (৩১), কাইয়ুম (২২), নয়ন দাস (২৮), শাওন দাস (২২) ও মাহমুদুল হাসান (২১)।
অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ জানান, ওই বাসায় শত শত ছেলে-মেয়ে অবৈধভাবে গান-বাজনা ও ডিজে পার্টি করে। এসবের অনুমতিও তারা সংশ্লিষ্ট থানা থেকে নেয়নি। সেই বারের কাগজপত্রগুলো আমরা চাইবো। এরপর ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান গোয়েন্দা বিভাগের এই কর্মকর্তা।
ডিবি প্রধান জানান, উত্তরা-পশ্চিম থানার ১৩ নম্বর সেক্টরের গরিবে নেওয়াজ অ্যাভিনিউ এলাকার ৩৫ নম্বর বাড়িতে দিনের আলো নিভে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে প্রবেশ করত শত শত ছেলে-মেয়ে। হিন্দি গান আর ডিজে পার্টির তালে তালে মেতে থাকত মদের নেশায়। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, বাড়িতে প্রতিদিন অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলত। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ অনেকেই এ বিষয়ে ডিবিতে অভিযোগ দেন। অভিযান চলাকালে ডিবির উপস্থিতি টের পেয়ে নাচানাচিতে মত্ব ছেলেমেয়েরা হুরোহুরি করে নিচে নেমে আসে।
এসময় তিনি আরও জানান কথিত এ বারের মালিক জনৈক মুক্তার হোসেন। তিনি এক সময় লেক ভিউ রেস্টুরেন্ট সহ নামিদামি বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের ওয়েটোর হিসেবে চাকরী করতেন। ঢাকায় বাড়ি গাড়ি সহ কোটি কোটি টাকার সম্পত্বির মালিক বনে গেলেন কিভাবে সে বিষয়েও তদন্ত করবে গোন্দোরা। কথিত মালিক মুক্তারের স্ত্রী সন্তানরা আমেরিকা প্রবাসী। মুক্তারের নারায়ণগঞ্জ, উত্তরা, মিরপুরে বেশ কয়েকটি বার রয়েছে। তবে মদ পাওয়া গেলেও সেখানে বারের কোন ব্যানার ছিলনা। কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি ম্যানেজার সহ উপস্খিত কেউই।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, উত্তরার কিংফিশার রেস্টুরেন্ট কাদের যাতায়াত ছিল, তা তদন্ত করে দেখা হবে। পুলিশের কোন কর্মকর্তা কিংবা অন্য কাদের যাতায়াত ছিল সেখানে, সে বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।