Search
Close this search box.

নির্মান কাজে জনভোগান্তির বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে- ও.কাদের

স্টাফ রিপোর্টার- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেতু সচিবকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, সেতু সচিব আপনি শুনুন, গাজীপুরের পুনরাবৃত্তি এখানে যেন না হয়। এখানে জনভোগান্তি যাতে না হয়। সে ব্যাপারে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এবং বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করে রাখবেন। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।

শনিবার ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আমাদের ধারাবাহিক উন্নয়নের আরেকটি মাইলফলক। প্রধানমন্ত্রী একদিনে ১০০ সেতু উদ্বোধন করেছেন। অনেকে জানতে চাইছে কীভাবে সম্ভব। শুধু প্রধানমন্ত্রীর  ম্যাজিক লিডারশিপের কারণে হয়েছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, সমতল থেকে পাহাড় পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ পথে আমাদের নেটওয়ার্ক আমরা সম্প্রসারিত করেছি। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে, আমাদের সীমান্তে সড়ক ছিল না। সেনাবাহিনী আমাদের সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করেছে। এটাও একটা নতুন সংযোজন, নতুন মাইলফলক। আমরা যেন গাজীপুরের পুনরাবৃত্তি এখানে না ঘটাই। সেতু সচিব আপনি শুনুন, গাজীপুরের পুনরাবৃত্তি এখানে যেন না হয়। এখানে জনভোগান্তি যাতে না হয়। সে ব্যাপারে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট এবং বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করে রাখবেন। এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা ঋণ নিয়েছি ঘি খাওয়ার জন্য নয়। বিএনপি যদি আরেকবার ক্ষমতায় আসে সব খাবে, বিদেশি ঋণ গিলে খাবে, গণতন্ত্র গিলে খাবে, সুযোগ পেলে বাংলাদেশও গিলে খাবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনা মহামারির অভিঘাতের মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী এক চরম অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সংকট প্রতীয়মান হচ্ছে তা একটি বৈশ্বিক সংকট। এই সংকটের অভিঘাতে জর্জরিত হচ্ছে আমাদের দেশের অর্থনীতিও। কেননা বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ নয়। এই সংকট মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করছে।

আইএমএফের ঋণ নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আইএমএফের ঋণ নিয়ে অবান্তর মন্তব্য করেছেন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রশ্ন তুলেছেন। বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব এমন তলানিতে ঠেকেছে যে, তারা এখন আইএমএফের ঋণ নিয়েও রাজনীতি করছে। কয়েক দিন আগে আইএমএফ যাতে ঋণ না দেয় সেজন্য তারা ষড়যন্ত্র করেছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছে। আবার আইএমএফ যখন ঋণ দিচ্ছে তখন তারা বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করছে। প্রকৃতপক্ষে তাদের গাত্রদাহের কারণ হলো আইএমএফ বাংলাদেশকে কেন ঋণ দিচ্ছে? মির্জা ফখরুল কী ভুলে গেছেন? বিএনপির সময় জাতীয় অর্থনীতি পরিচালিতই হতো বৈদেশিক সহায়তা ও ঋণের ওপর ভিত্তি করে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি গড়ে জাতীয় আয়ের ২৮ শতাংশ ঋণ নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছে; তাদের সময় রিজার্ভ ছিল সাড়ে ৩ বিলিয়নেরও কম; তাদের সর্বশেষ বাজেট ছিল মাত্র ৬৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা।

আইএমএফের ঋণ ও রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে বিএনপি জনমনে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে অভিযোগ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের পরও বৈদেশিক ঋণের নির্ভরতা বহুলাংশে কমেছে। রিজার্ভ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলার এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮.২ শতাংশ ছুঁয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান বাজেট বিএনপির সর্বশেষ বাজেটের তুলনায় প্রায় দশগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ বিএনপি নেতৃবৃন্দ আজ নির্লজ্জের মতো আইএমএফের ঋণ নিয়ে কথা বলেন! রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন! প্রকৃতপক্ষে, বিএনপি নেতৃবৃন্দ এই সংকটকে পুঁজি করে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সংকটে আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে সচেতন ও উদ্যোগী হলেই তা মোকাবিলা সহজতর হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সংকট মোকাবিলায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

আইএমএফের ঋণ পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা আরও একবার প্রমাণিত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, চলমান বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। এডিবি সুস্পষ্টভাবে বলেছে, ‘শ্রীলঙ্কার মতো হবে না বাংলাদেশ।’ বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য আছে বলেই আইএমএফ ঋণ প্রদানে সম্মত হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে আরও একবার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। অথচ বিএনপির সময় অর্থনৈতিক সক্ষমতা বলতে কিছুই ছিল না। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরনির্ভরতার সেই সংকট থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্তরণ ঘটেছে; আইএমএফের এই ঋণ জনগণের জন্য বোঝা না হয়ে সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, চলমান বৈশ্বিক সংকটের ভয়াবহ অভিঘাত থেকে দেশের মানুষকে সুরক্ষা দিতে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ও দেশপ্রেমিক নাগরিকের দায়িত্বশীল আচরণ এবং কর্তব্যপরায়ণতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেখানে বিএনপি এই সংকটকে পুঁজি করে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তারা সংকটকে আরও ঘনীভূত করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। দেশবিরোধী এবং দেশের মানুষের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত বিএনপির এই হীন অপ-তৎপরতা রুখে দিতে সকলকে সচেতন হতে হবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস সঞ্চালনা করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ