শাহনাজ পারভীন এলিস/ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উদ্বোগে চালু হওয়া ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় শ্রেষ্ঠ জয়ীতা নারী-২০২২ সম্মাননা পেয়েছেন দিনাজপুরের হাফিজা শারমীন সুমী। তিনি বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সঙ্গীত শিক্ষক এবং ভিকারুননিসা নূন কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি রংপুর বিভাগ থেকে
জাতীয় পর্যায়ের এই সম্মাননা অর্জন করেন।
বেগম রোকেয়া দিবস এবং আন্তার্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দিনাজপুরের শিশু একাডেমি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় হাফিজা শারমীন সুমীর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য জাকিয়া তাবাসসুম জুঁই। এসময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
শারমীন সুমী ১৯৭৯ সালে দিনাজপুরের শিক্ষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মোহাম্মদ ওসমান আলী দেওয়ান ছিলেন দিনাজপুরের বেসরকারি একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সেখানে তার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ‘দেওয়ান স্যার ফাউন্ডেশন’ এর মাধ্যমে স্থানীয় দুস্থ, অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষদের সহযোগিতায় তিনি কাজ করেন। সমাজের নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝে বেড়ে ওঠা অদম্য এই নারী মহিলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, জাতীয় লেডিস ক্লাবের সদস্য।
টিউশনি দিয়ে জীবন শুরু করেছিলেন শ্রেষ্ঠ জয়ীতা সম্মাননা অর্জনকারী এই নারী। শৈশবে শারমীন সুমী নতুন কুঁড়ি-১৯৮৫-৯০ সালে সঙ্গীতের ৪টি বিভাগে শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময় জাতীয় পর্যায়ে সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি এ পর্যন্ত ১১টি স্বর্ণপদক অর্জন করেছেন।
পেশা হিসেবে শারমীন সুমী শিক্ষকতা ও সঙ্গীতকে বেছে নিলেও ভালোবাসেন লিখতে ও গবেষণা করতে। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রবন্ধ লেখা ছাড়াও গবেষণামূলক বই, কিশোর সাহিত্যে প্রচ্ছদ শিল্পী হিসেবেও তিনি কাজ করেন। এপর্যন্ত তার লেখা ১৭টি একক বই প্রকাশিত হয়েছে; যার মধ্যে চারটি বই বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে পঠিত হয়।
বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত শ্রেষ্ঠ জয়ীতা সম্মননা অর্জন তার পেশাগত জীবনের পরম প্রাপ্তি বলে মনে করেন হাফিজা শারমীন সুমী। জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ- নামে সরকারের এই পদক্ষেপের তিনি প্রশংসা করেন এবং এই সম্মননা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সরকারের এ ধরনের কার্যক্রম সমাজের নানা স্তরের সংগ্রামী নারীদের অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং তাদের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে বলেও জানান তিনি।