স্টাফ রিপোর্টার- গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বিষয় অবগত করতে ঢাকাস্থ কূটনৈতিক মিশনগুলোতে চিঠি দিয়েছে সরকার। গত সোমবার সন্ধ্যায় কূটনৈতিক মিশনগুলোতে এই চিঠি পাঠানো হয় বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।
এতে বলা হয়েছে, অশান্তি সৃষ্টি করে অসাংবিধানিক শক্তিকে ক্ষমতায় আনা ছিল বিএনপি উদ্দেশ্য। এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তারের কারণও ব্যাখ্যা করা হয় ওই চিঠিতে।
কূটনৈতিক কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করেন। সেদিন তাদের পূর্বনির্ধারিত কোনো কর্মসূচি ছিল না। এমনকি পুলিশের অনুমতিও নেয়নি দলটি। বিএনপি নেতাকর্মীদের অবরোধের কারণে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ওই এলাকায় যান চলাচল চরমভাবে বিঘ্নিত হয়।
এ অবস্থায় পুলিশ দলটির নেতাকর্মীদের সড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ করে। কিন্তু অবরোধকারীরা তা অগ্রাহ্য করে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা, ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপের পাশাপাশি যানবাহনে ভাঙচুর চালায়। এতে পুলিশের ৪৯ জন সদস্য আহত হন, যার মধ্যে একজনের অবস্থা বেশ গুরুতর। সেই ঘটনায় দুঃখজনকভাবে একজন পথচারী নিহত হয়েছেন।
সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ ঘিরে ঢাকায় বেপরোয়া সহিংসতার পরিকল্পনা করেছিল বিএনপি। দলটির নেতাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা উচিৎ ছিল। কিন্তু তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন না বরং তাদের উদ্দেশ্য ছিল অশান্তি সৃষ্টি করে অসাংবিধানিক শক্তিকে ক্ষমতায় আনা। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো রকম ঝুঁকি নেয়নি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, যথা সময়ে পুলিশ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ায় ওই দিন জনগণের জানমালের বড় ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়। নয়াপল্টনে সহিংসতার পরিকল্পনা ও পুলিশের ওপর হামলায় ইন্ধন থাকায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই দুই সিনিয়র নেতাসহ অন্যদের নামে চারটি মামলা রয়েছে। ৮ ডিসেম্বর ডিবি পুলিশ মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনায় তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে পরবর্তীতে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন এবং কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দূতাবাসে গিয়া বিএনপির পক্ষ থেকে অতিরঞ্জিত করে নানা বিষয় উপস্থাপন করা হয় এবং তাদের প্রমোট করা হয় যাতে তারা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়। তাদের সঠিক তথ্য সরবরাহ করার স্বার্থে ফরেন মিনিস্ট্রি থেকে সে তথ্যগুলো জানানো হয়েছে।