স্টাফ রিপোর্টার- স্বাধীনতার চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করতে অনেক অপপ্রচার চলছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। এই স্বাধীনতা খুবই চড়া মূল্যে পাওয়া বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান- নিপসমে আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াত গত ১০ ডিসেম্বরকেন্দ্রিক দেশব্যাপী বিরাট হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র করেছিল জানিয়ে তিনি বলেন, একাত্তর সালের দোসররা এখনো সক্রিয়। তারাই বর্তমানে ঐক্যবদ্ধভাবে বিভিন্ন দেশের অ্যাম্বাসিতে ঘুরে ঘুরে সরকার পতনের নীলনকশা করছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকে টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এরকম গুজব মুক্তিযুদ্ধের সময়েও ছড়ানো হয়েছিল। যারা এখনো বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিতে পারেনি, তারা প্রতিশোধ নিয়েছে জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে। এখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য পরাজিত শক্তি কাজ করে যাচ্ছে। রাজাকার সাকা (সালাউদ্দিন কাদের) চৌধুরীর ছেলে যেভাবে ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দেয়, এতেই বোঝা যায় তারা থেমে থাকেনি। এমনকি আমাদের জাতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে।
ফরহাদ হোসেন আরও বলেন, অসংখ্য প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত যারা ব্যর্থ ছিল তারাই এখন সফলতার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। তাদের রুখে দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মো. খুরশীদ আলম বলেন, আজকের দিন শোকের দিন, স্মরণের দিন। ইতিহাস মুছে যায় না। যারা ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখে, তারাও সম্মানের পাত্র। শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। এখনো অনেক শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবার নানা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন, তাদের সব সমস্যা আমাদেরকে সমাধান করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যদি কোনো করণীয় থাকে আমরা সর্বোচ্চটা করবো।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনিদের বিচার করেছি, কিন্তু যারা হুকুমদাতা ছিল তারাও কিন্তু খুনি। তাদের কিন্তু আমরা কিছু করতে পারছি না। তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা পর্দার পেছনের লোকদের খুব বেশি মনে করি না। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মনে করি, কিন্তু তারা শহীদ হওয়ার পর তাদের পরিবার কী অবস্থায় জীবনযাপন করেন, সেটি আমরা খুঁজে দেখি না। তারা অনেক সংগ্রাম করছে, তাদের পাশেও আমাদের দাঁড়াতে হবে।
উপাচার্য বলেন, আমরা যদি নিজ নিজ এলাকায় গরিব রোগীদের সেবা দিই, তাহলে কিন্তু অনেকেই উপকৃত হয়। তেমনিভাবে যুদ্ধাহত পরিবারগুলোর একটু খোঁজ নিতে হবে। আজকে যারা বসতি হারানোর শঙ্কায় আছে, তাদের বসতির নিশ্চয়তা আমাদের দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিপসম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়েজিদ খুরশিদ রিয়াজ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।