Search
Close this search box.

বর্জ্যমুক্ত স্মার্ট নগরী গড়তে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় ডিএনসিসি

স্টাফ রিপোর্টার- বর্জ্যমুক্ত স্মার্ট নগরী গড়তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের কমার্শিয়াল ল ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম (সিএলডিপি) এর আমন্ত্রণ ও অর্থায়নে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের একটি প্রতিনিধি দল ফ্লোরিডা সফরে রয়েছেন।

সফরকালে ফ্লোরিডার মিয়ামি শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর ভিজ্যুয়্যাল প্রেজেন্টেশন ও তথ্য উপাত্ত তুলে ধরা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৯ টায় মিয়ামির ডেড কাউন্টিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন মিয়ামি ডেড কাউন্টির ডিপার্টমেন্ট অব সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মিকেল ফার্নান্দেজ , শেহরা ধুরাম , রোনাল্ড হাওয়ার্ড, ড্যানি দিয়াজ, আচেয়া কালপেন্দা, রেনাতো পেরিয়া ও কনসালটেন্ট জোস এ গ্লান।

মিয়ামি ডেট কাউন্টি কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন ১২ লাখ মানুষের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকে । এই স্বল্প সংখ্যক মানুষ প্রতিদিন প্রায় ৪২০০ টন বর্জ্য উৎপন্ন করে থাকে। যেখানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় দেড় কোটি মানুষ প্রতিদিন উৎপন্ন করে মাত্র ২৫০০ টন বর্জ্য। তবে শুধুমাত্র সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণেই এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য তাদের কাছে বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হয়েছে। ঢাকা সিটির বর্জ্য কিভাবে সম্পদে পরিণত করা যায় তার সরজমিন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে ডিএনসিসি প্রতিনিধি দল।

মিয়ামির ডেড কাউন্টি কর্তৃপক্ষ প্রতি টন বর্জ্যের জন্য ৬৮ ইউএস ডলার করে নেয় বর্জ্য উৎপন্নকারীদের কাছ থেকে। এর পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়, যেখানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি টন বর্জ্যের জন্য জনগণের কাছ থেকে নেয় ১২৫ ডলার পর্যন্ত নিয়ে থাকে।  সরকারিভাবে মিয়ামি ডেড কাউন্টি বর্জ্য সংগ্রহ করে ল্যান্ড ফিল্ডে নিয়ে যায়। এরপর ভারী বর্জ্য আলাদা করে, বাকি বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।  বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরে যে ছাই উৎপন্ন হয় সেটি দিয়েই আবার বিশেষ পদ্ধতিতে টিলা তৈরি করা হয়। এর ফলে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণও ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছে মিয়ামি ডেড কাউন্টি। কিভাবে এতো বেশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজটি করা হয় তার বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয় দিনব্যাপী কর্মশালা ও সরজমিনে পরিদর্শনের মাধ্যমে।

মিয়ামি শহরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘মিয়ামি শহর জনসংখ্যার তুলনায় আমাদের চেয়ে ছোট। তবে এখানে প্রতিদিন যে বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে তা ডিএনসিসির চাইতে বেশি। বিপুল পরিমাণ এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনাটা আধুনিক মানের। তাদের এই ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতাকেই আমরা কাজে লাগাতে চাই। এর পাশাপাশি তারা প্রায় ৪০ বছর যাবৎ এই বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ও বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে তবে তা আরো অনেক আধুনিক প্রযুক্তির। মিয়ামি সব বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে না যদিও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেখানে সব ধরনের বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা এরই মধ্যে আমিনবাজার ল্যান্ডফিল্ডকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় প্রস্তুত করছি; যা আগামী দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ ডিএনসিসির কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের অর্থায়নে মিয়ামি শহরে সরেজমিনে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে।এখানকার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ডিএনসিসিকে গড়ে তোলা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ামির সিটি ডেভলপমেন্টকে কাজে লাগাতে চাই। মিয়ামিতে যেখানে বর্জ্য শোধন করে পাশেই বড় বড় দুটো টিলা বা পর্বতমালা নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানেই বসতি স্থাপন করেছে।’

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, ২৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মঞ্জুর, ৫২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানা ইতি ও মিতু আক্তার, ডিএনসিসির প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. বরকত হায়াত, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) অতিরিক্ত ড্রেনেজ সার্কেল আবুল হাসনাত মো. আশরাফুল আলম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সিভিল) খন্দকার মাহবুব আলম, নির্বাহী প্রকৌশলী অতিরিক্ত দায়িত্ব পরিকল্পনা ও নকশা বিভাগ তাবাসসুম আব্দুল্লাহ, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমদাদুল হক, নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) ফারুক হাসান মো. আল মাসুদ, মেয়রের একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ