স্টাফ রিপোর্টার- গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষদিন গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন, জাকের পার্টি ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আজমত উল্লাহ খান মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা শাহনুর ইসলাম সরকার রনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দেন ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান। একই দিনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, তার মা জায়েদা খাতুন মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে প্রার্থীগণ সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করেন। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও তার মা জায়েদা খাতুনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হয়েছে।
বিকালে জাহাঙ্গীর আলম নিজে উপস্থিত হয়ে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন। আর তার মায়ের পক্ষে জমা দেন প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী সহ লোকজন। পরে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি যদি নগরবাসীর জন্য অতীতে ভালো কাজ করে থাকেন তাহলে যেন সবাই তাকে ভোট দেন।
সবাই যেন নির্বাচনে সহযোগিতা করেন। এ ছাড়া গত দেড় বছর ধরে তিনি একটা মিথ্যার মধ্যে রয়েছেন। তিনি এই নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে গুম, খুন ও কারাভোগের শঙ্কায় রয়েছেন। এ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে তিনি মারা গেলেও যাতে সত্য প্রতিষ্ঠা হয় সেটাই তিনি সবার কাছে চান। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর সাংবাদিকদের বলেন, আমি আশা করছি, স্বাধীনতার চেতনা ও মূল্যবোধের নৌকা প্রতীকে নগরবাসী ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করবেন। গাজীপুরের আমজনতা এই সিটি করপোরেশনকে একটি দুর্নীতিমুক্ত নগর হিসেবে দেখতে চায়। একটি স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক এবং জনগণের অংশগ্রহণমূলক সিটি করপোরেশন চায়। ময়লা আবর্জনামুক্ত সিটি করপোরেশন হিসেবে দেখতে চায়। যেটা আমার দ্বারা সম্ভব।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা শাহানুর ইসলাম সরকার রনি মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর বলেছেন, নগরবাসীর আশার প্রতিফলন ঘটানোর জন্যই আমি এই সিটি করপোরেশনে প্রার্থী হয়েছি। আশা করি, যেহেতু বিএনপি’র দলীয় কোনো প্রার্থী নেই, যেহেতু আমি বিএনপি পরিবারের সন্তান এবং যেহেতু বিএনপি করে বলেই আমার বাবা ১৮ মাস ধরে জেলে আছেন, তাই আশা করছি, আমার বাবার প্রতি সাধারণ মানুষের যে ভালোবাসা দেখেছি, তাই আমি মনে করি আওয়ামী লীগ-বিএনপি থেকে শুরু করে সকল সাধারণ জনগণ নির্বাচনে আমার পাশে থাকবে। এদিকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৮২ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৯০ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনের প্রার্থীরা যাতে আচরণবিধি কঠোরভাবে মেনে চলেন সেজন্য তাদের নানা ধরনের পদক্ষেপ রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে এবং নির্বাচন আচরণবিধি যাতে লঙ্ঘিত না হয় সেজন্য তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। আগামী ৩০শে এপ্রিল মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৮ই মে এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ই মে। ইভিএমের মাধ্যমে ২৫শে মে অনুষ্ঠিত হবে এই সিটি করপোরেশন নির্বাচন।