স্টাফ রিপোর্টার – এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা রবিবার শুরু হয়েছে। এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। যারা প্রশ্নফাঁসের গুজব রটাবে, ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শনিবার দুপুরে ভোলার চরফ্যাশনে অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কলেজের একাডেমিক ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমনটি বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সেটার ব্যাপারে গবেষণা চলছে। এরপরেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অনুষ্ঠানে দেশকে ভালোবাসতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান দীপু মনি।
সারা দেশে ১১টি শিক্ষা বোর্ড থেকে এ বছর পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ২১ হাজার ১৯৭ জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৫০ হাজার ৯৬৬ জন। ২৯ হাজার ৭৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৩ হাজার ৮১০টি কেন্দ্রে এবার পরীক্ষা হবে। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ২০৭টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ২০টি।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষা সব বিষয়েই নেওয়া হবে। প্রতিটি বিষয়ে স্বাভাবিক সময় বা তিন ঘণ্টা পরীক্ষা হবে। সৃজনশীল ও নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন (এমসিকিউ) থাকবে আগের মতোই। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা শুরুর দিনে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা হয়েছে। ২ মে বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ৩ মে ইংরেজি প্রথম পত্র, ৭ মে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র, ৯ মে গণিত, ১০ মে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, ১১ মে ধর্মশিক্ষার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ১৪ মে পদার্থবিজ্ঞান, ১৫ মে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, ১৬ মে রসায়ন, ১৭ মে ভূগোল ও পরিবেশ, ১৮ মে জীববিজ্ঞান, ২১ মে বিজ্ঞান, ২২ মে হিসাববিজ্ঞান এবং ২৩ মে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ের পরীক্ষা হবে। সাধারণত, এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারির শুরুতে ও এইচএসসি পরীক্ষা এপ্রিলের শুরুতে হতো। কিন্তু করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে পুরো শিক্ষাপঞ্জি এলোমেলো হয়ে গেছে।
পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষাবোর্ডগুলো। এরমধ্যে ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীর দেরি হলে তার নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, দেরি হওয়ার কারণ ইত্যাদি একটি রেজিস্টারে লিখে রাখা হবে।
ট্রেজারি-থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাচ যুক্ত মাইক্রোবাস বা এরূপ কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।
পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের সেট কোড সচিবকে জানানো হবে। সেই অনুযায়ী কেন্দ্র সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খুলবেন। জেলার ক্ষেত্রে ট্রেজারি এবং উপজেলার ক্ষেত্রে খানা প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক সংরক্ষণ করতে হবে।
পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে সর্ব সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। কোনো প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক কোনোভাবে পরীক্ষায় বেআইনি কোনো কাজ করলে সে প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দোষী শিক্ষক ও কর্মচারী সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হলে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হলে তার এমপিও স্থগিত করা হবে। ট্রেজারি/থানা থেকে প্রশ্ন কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য দূরত্ব অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সময় নির্ধারণ করে প্রশ্নপত্র আনতে হবে।
চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দেশের বাইরে ৮টি কেন্দ্র এবার মোট ৩৭৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে জেদ্দায় ৮৯ জন, রিয়াদে ৫১ জন, ত্রিপলীতে ৪ জন, দোহায় ৭৭ জন, আবুধাবীতে ৪১ জন, দুবাইয়ে ২৭ জন, বাহরাইনে ৬৫ জন, সাহাম ওমানের ২০ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।
পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা (পরীক্ষার্থী, কক্ষ প্রত্যবেক্ষক, মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন টিম, বোর্ডের পরিদর্শন টিম, জেলা ও উপজেলা পরিদর্শন টিম, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য) ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।