গত এপ্রিলে বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে কলাগাছের তন্তু থেকে তৈরি ‘কলাবতী শাড়ি’ তৈরির খবর গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছিল। খরবটি দৃষ্টি এড়ায়নি খোদ প্রধানমন্ত্রীর। কলাগাছের তন্তু দিয়ে শাড়ি তৈরির খবর অনেকটা অবাক করেছিল তাঁকে। এবার সেই শাড়ি উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। অনেকটা উৎফুল্ল মনে গ্রহণ করেন সেই উপহার। হাসিমুখে শাড়িটি গায়ে জড়িয়ে ছবিও তোলেন সরকারপ্রধান।
সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রিসভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে তিনটি শাড়ি ও হস্তশিল্পজাত পণ্য উপহার দেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভিন তিবরীজি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কলাগাছের তন্তু থেকে তৈরি কলাবতী শাড়ির সঙ্গে হস্তশিল্পজাত পণ্য, দুটি জুয়েলারি বক্সও দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কলাগাছের তন্তু থেকে মনিপুরী ডিজাইনের এই শাড়ি প্রস্তুত করেন মৌলভীবাজারের তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী। আর প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়া শাড়ি তিনটি তৈরি করেছেন অঞ্জলী দেবী ও দত্ত সিংহ।
এছাড়া পার্বত্য এলাকায় বাসোপযোগী আশ্রয়ণের একটি বিশেষ মাচাং ঘরের মডেল, জেলা ব্র্যান্ডের ক্যালেন্ডার এবং ব্র্যান্ড বুকও বান্দরবানের জেলা প্রশাসক প্রধানমন্ত্রীকে প্রদান করেন।
ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কলা গাছের তন্তু থেকে হস্তজাতশিল্প তৈরির জন্য পাইলট বা পরীক্ষামূলক একটি প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। কয়েক ধাপে সদর উপজেলার প্রায় সাড়ে ৪০০ নারী ও পুরুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
তবে কলাগাছের তন্তু দিয়ে অফিস আদালত বা সভা সেমিনারে ব্যবহারের জন্য ফোল্ডার, ঝুড়ি, শতরঞ্জি, কলমদানি, পাঁচতারকা হোটেলের ঘরের ভেতর পরার জন্য জুতাসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি হলেও এটি দিয়ে কাপড় বা শাড়ি বানানো যায় কি না, তা দেখার জন্যই প্রথমে কাপড় বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাপড়টি অনেক মোটা আর খসখসে হয়। কাপড় যেহেতু বানানো গেছে, তাই চেষ্টা করলে শাড়িও বানানো সম্ভব এ চিন্তা থেকেই অবশেষে আস্ত একটি শাড়িই বানিয়ে ফেলেছেন মৌলভীবাজারে ১৯৯২ সাল থেকে মণিপুরি শাড়ির কারিগর রাধাবতী দেবী।