মে মাসে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এক হাজারের ঘরে (১০৩৬ জন) ছিল। জুন মাসে এসে সে চিত্র পাল্টে যায়। জুনে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ছয়গুণ বেড়ে ৫৯৫৬ হয়। তবে, সব হিসাব পাল্টে দিয়ে জুলাই মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহের চিত্রও ‘ভালো’ কোনো বার্তা দিচ্ছে না। এ মাসে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৯০০ জন।
শুধু আক্রান্তই নয়, এরই মধ্যে রেকর্ড গড়েছে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যাও। আবার ডেঙ্গু আক্রান্তের এ সংখ্যাও চূড়ান্ত নয়। কারণ, এটি কেবল আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির চিত্র। যারা আক্রান্ত হন কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হন না, তারা হিসাবের বাইরে রয়ে যাচ্ছেন।
ডেঙ্গু সংক্রান্ত হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো রোববারের বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৬৬ হাজার ৭৩২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৫ হাজার ৬০১ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩১ হাজার ১৩১ জন।
২০২২ সালে দেশে মোট ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন। করোনা মহামারি শুরুর বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ১৪০৫ জন। অবশ্য তার আগের বছর ২০১৯ সালে দেশে লক্ষাধিক মানুষ মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হন। সে সংখ্যা এক লাখ এক হাজার ৩৫৪। এবারও ২০১৯-এর মতো বা তার চেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
চলতি বছরের মাসভিত্তিক আক্রান্তের চিত্রে দেখা যায়, জানুয়ারিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১০৩৬ জন, জুনে ৫৯৫৬ জন, জুলাইয়ে ৪৩,৮৫৪ জন এবং আগস্টের ৬ তারিখ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১৪,৯০০ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্তের এ সংখ্যার লিঙ্গ বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুরুষদের আক্রান্তের হার ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ, আর নারীদের আক্রান্তের হার ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
ঢাকায় চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় (নারী-পুরুষ মিলিয়ে), ০ থেকে ৫ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০২৪ জন, ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৩০০৮ জন, ১১ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ৩১১৪ জন, ১৬ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৪০৫১ জন, ২১ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে ৪৯৪২ জন, ২৬ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৪৬৬৮ জন, ৩১ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে ৩২০৭ জন, ৩৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৭৫৯ জন, ৪১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে ১৭৮৪ জন, ৪৬ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৪৬৬ জন, ৫১ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে ১১৬৮ জন, ৫৬ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯০১ জন, ৬১ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে ৬৪৫ জন, ৬৬ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৪২১ জন, ৭১ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে ২২৫ জন, ৭৬ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১১৭ জন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী রয়েছেন ১০১ জন।
ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্তদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ০ থেকে ৫ বছরের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১১১৩ জন, ৬ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১২৩৯ জন, ১১ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ২১০৫ জন, ১৬ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৪৭৮৪ জন, ২১ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে ৫৫২৬ জন, ২৬ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৪৩১৪ জন, ৩১ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে ২৯৬৯ জন, ৩৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৪৯৫ জন, ৪১ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে ১৬২৬ জন, ৪৬ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৪২২ জন, ৫১ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে ১১২৬ জন, ৫৬ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯৮২ জন, ৬১ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে ৫৯৯ জন, ৬৬ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৪১২ জন, ৭১ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে ১৭৭ জন, ৭৬ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ১৪৮ জন এবং ৮০ বছরের বেশি বয়সী রয়েছেন ৯৪ জন।