এক মৌসুমে দুই বার চাষ করা যাবে আলু। ফলন মিলবে হেক্টর প্রতি ৪২ থেকে ৪৫ টন। নেদারল্যান্ডস থেকে আমদানি করা ভ্যালেন্সিয়া জাতের আলুতে মিলছে এমন সাফল্য। প্রাথমিকভাবে চাষ হচ্ছে ঠাকুরগাঁওসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েক জেলায়। গবেষকরা বলছেন, এর ফলে আমাদানি নির্ভরতা কমিয়ে রপ্তানি করা যাবে আলু।
ঠাকুরগাঁও সদরের নিমবাড়ি এলাকার কৃষক খালেকুজ্জামান। এক একর জমিতে চাষ করেছেন ভ্যালেন্সিয়া জাতের আলু। এই জাতটিতে রোগবালাই কম হয় উল্লেখ করে আশা করছেন, লাভবান হওয়ার।
কৃষক খালেকুজ্জামান বলেন, এটা বর্ষার শেষ মৌসুমে লাগালে ওই আলুটা তুলে একই জমিতে আরেকবার লাগানো যায়। এমনকি পূর্বে আমি দুইবার করেছিলাম ফলন ভালো হয়েছিল।
একই ধরণের তথ্য উঠে এসেছে আলুর এই জাতটির চাষ বিষয়ক মাঠ দিবসে। অন্য কৃষকরাও বলছেন, উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প জীবনকালের এই আলু চাষে লাভবান হবেন তারা।
আরেকজন কৃষক বলেন, এই আলুটি এমন একটি জাত যা অন্যান্য জাতের তুলনায় তার ইলড বেশি এবং ৬০ দিনে আলু অন্য জাতের তুলনায় ওজনটাও বেশি হয়।
নেদারল্যান্ডস থেকে আমদানি করা ভ্যালেন্সিয়া জাতের আলুর হেক্টর প্রতি ফলন মিলছে ৪২ থেকে ৪৫ টন। দেশি জাতের চেয়ে বেশি ২৮ গুণ। তাই গুণগত মান পরীক্ষা করে বীজ তৈরির দিকে মনোযোগ দিয়েছেন গবেষকরা।
আলু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডক্টর তুহিন শুভ্র বলেন, এটা আমাদের ঢাকাসহ যে বড় বড় শহর আছে সেই শহরগুলোতে এই আলু নিয়ে কৃষকরা সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি করবে। ফলে মধ্যসত্ত্বভোগী যারা বসে আছে দাম বেশির জন্য তারা কিন্তু আর এই জায়গায় ঢুকতে পারবে না।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক বেলাল হোসেন বলেন, বীজটা বাহির থেকে নিয়ে এসে এ আলু লাগানো হচ্ছে। এরপর কিভাবে এটাকে বীজ হিসেবে আমরা তৈরি করতে পারি এই দিকে আমাদের এডভান্সড টেকনোলজি ব্যবহার করে দেশে বীজ তৈরি করার চেষ্টা করব।
৫০ থেকে ৬০ দিনে ফলন তুলে খাবার আলু হিসাবে বিক্রি করা যায় এই আলু। তাই একই মৌসুমে উৎপাদন করা যাচ্ছে দুই বার। এমন সুখবরে গবেষকরা বলছেন, আমদানি নির্ভরতা কাটিয়ে আলু রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ বলেন, চার থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে দুইটা ফসল সংগ্রহ করতে পারবে, সুতরাং মোট উৎপাদন বেড়ে যাবে। পাশাপাশি তাদের আয়ও বেড়ে যাবে।
চলতি বছর ঠাকুরগাঁও, রংপুর, বগুড়ায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে ভ্যালেন্সিয়া জাতের আলু।