স্টাফ রিপোর্টার \ নিজ সংস্থায় জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেছেন, যেখানেই জনগণের স্বার্থক্ষুন্ন হয় সেখানেই আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ২১৭ জন জনবল দিয়ে সব ভোক্তার জন্য জন্য কাজ করা অসম্ভব। তাই প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পেতে সবার আগে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংগঠনটির সদস্যদের অংশগ্রহণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ভোক্তাদের নিজেদের অধিকার সম্পর্কে গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, সবার অংশগ্রহণ ছাড়া আসলে পরিবর্তন সম্ভব না।
সম্প্রতি তেল ও চালের বাজার অস্থিরতা নিয়ে মহাপরিচালক বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধির পরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু তখন বড় ধরণের ব্যবস্থা নেয়া যায়নি কারণ এতে বাজার হয়তো আরো অস্থিতিশীল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হত।
অসাধু ব্যবসায়ীদের বাজার কারসাজি নিয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন ১৬০ টাকা তেলের লিটার বেঁধে দেয়ার পর সেটা মূল্য ঠিক জায়গায় আনতে ১৫দিন সময় লেগেছে। আমরা আসলে খেয়াল করেছি যখন দাম বেড়ে যায় তখন একদিন পরই বাড়তি দাম নেয়া হয়। কিন্তু যখন দাম কমে তখন আর ব্যবসায়ীদের স্টক ফুরায় না।
তিনি বলেন, রমজানের ঈদের পর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে একে অন্যকে ব্লেম গেম দেয়া শুরু করেছে। পরে সবাইকে জিম্মি করে ফেলে। নিজেরা যোগসাজশ করে বাজারে সংকট তৈরি করেছে।
চালের বাজার নিয়ে তিনি বলেন, চালের দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই কিন্তু দাম বেড়েছে এটাই ঠিক। আমরা অভিযান শুরু করেছি। ব্যবসায়ীরা কেউ কেউ বলছেন ভোক্তা অধিকার চালের ঘ্রাণ নিয়ে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করছে। আমার মনে হয় না আমাদের কোনো কর্মকর্তা এমনটা করে না।
বাজার স্বাভাবিক রাখতে সমিতির লোকদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করা হলেও সুফল পাওয়া যায় না বলে দাবি করেন ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, বাজার কমিটির লোকদের গোডাউনে লাখ লাখ তেল উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু চাইলে তারা নিজেরা বাজার ঠিক করতে পারেন। তাহলে ভোক্তা অধিকার আর সেখানে না গেলেও চলে।
ভোক্তা অধিকারের নাম দিয়ে একটি চক্র মানুষকে হয়রানি করছে এমন অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানান মহাপরিচালক। তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ভোক্তা অধিকারের কাছাকাছি নাম ব্যবহার করে একটি চক্র নোটিশ দিয়ে চাঁদা নিচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা সবাইকে সতর্ক করছি। আপনারাও (সাংবাকিদকরা) সতর্ক করতে সহযোগিতা করবেন আশা করি।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, পুরোপুরি চাপমুক্তভাবে কাজ করছি। অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানে অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি, সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে। কিন্তু কোনো মহল থেকে আমি চাপের মুখে পড়িনি।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের সংশোধনের কাজ চলছে বলেও এক প্রশ্নের জবাবে জানান মহাপরিচালক। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক বড় করর্পোরেট হাসপাতাল তারা সার্ভিস চার্জসহ নানা নাম করে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। শিগগিরই ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতেও অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযোগ পেলে আমরা আরও কাজ করবো।
আগামীতে ভোক্তাদের সচেতন করা এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কিভাবে আরো বড় পরিসরে কাজ করতে পারে সে পরিকল্পনা করার কথা বলেন সংস্থাটির মহাপরিচালক।