স্টাফ রিপোর্টার : লোড শেডিং সাময়িক, দেশবাসীকে ধৈর্য ধরতে বললেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ইউনিট কমিটির পরিচিতি সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে প্রাকৃতিক কারণে বিদ্যুতের সরবরাহ সমস্যা। মুল্য বৃদ্ধির কারণে সারা বিশ্বে জালানির সমস্যা। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এই সংকট আরও চরম হয়েছে। ইউরোপের দিকে তাকান, আমেরিকার দিকে তাকান, আমাদের প্রতিবেশী দেশের দিকে তাকান। আজকে জ্বালানি সমস্যা সারা দুনিয়ার সমস্যা, এটা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়।’
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনো বিচ্ছিন্ন দেশ নয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন কোনো সমস্যা নয়। সমস্যা হচ্ছে জ্বালানি সরবরাহ, বিশ্বব্যাপী এর মূল্য বৃদ্ধি। বাস্তবতা নিয়ে চলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয় করতে হবে। কোথাও কোথাও লোড শেডিং হয়েছে, তা সাময়িক। আমরা জনগণকে সাময়িক এই অসুবিধার জন্য ধৈর্য ধারণ করে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি। শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছেন শেখ হাসিনা, সেই শতভাগ বিদ্যুৎ আপনাদের (বিএনপি) মত চুরি করার জন্য নয়, শতভাগ বিদ্যুৎ শতভাগই থাকবে। সারা বাংলায় থাকবে।’
ওবায়দুর কাদের বলেন, ‘এই বছরেই মেট্রোরেল আসছে, দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র নদীর তলদেশ দিয়ে রাস্তা হচ্ছে, সেটা চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল, দেখবেন। ঢাকার এক্সেপ্রেসওয়ে হচ্ছে, কত ফ্লাইওভার আন্ডারপাস, গভীর সমুদ্রবন্দর হচ্ছে।’
‘লজ্জা থাকলে’ লোড শেডিং নিয়ে বিএনপির কথা বলা উচিত নয় দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বড় বড় কথা বলেন, বিএনপি-জামায়াত বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলেন কোন মুখে? মনে আছে ফখরুল সাহেব, ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোড শেডিং দিনের পর দিন লোড শেডিং। মানুষ বলত, বিদ্যুৎ গেল খালেদা জিয়া গেল। তাদের লজ্জা শরম যদি থাকত, তারা লোড শেডিং নিয়ে কথা বলত না। দিনের অর্ধেক সময় লোড শেডিং ছিল, শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, আর তারা বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে। ভুলে যাইনি, বিদ্যুৎ নয়, কী দিয়েছে, খাম্বা। বাংলার মানুষ আজও ভুলে যায়নি, বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনে পুলিশের গুলি, ভুলে যায়নি অন্ধকারে মোম জ্বালিয়ে ক্লাস করা। এটা নিয়ে বিদ্যুৎ ভবন ঘেরাও সারা বাংলায়। বিএনপি আমলে, মনে আছে? এই নগরীতে জনপ্রতিনিধি যাচ্ছিলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে জনগণের বিক্ষোভের মধ্যে দৌড়াতে দৌড়াতে পালিয়ে যেতে হয়েছিল।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি এখন আবোল তাবোল বলছে, কারণ তারা সামনে কিছু দেখছে না, সামনে অন্ধকার, গভীর অন্ধকার। দিনের আলোতে তারা অমাবস্যার অন্ধকার দেখছে। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করে না, ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়, ষড়যন্ত্র চলছে দেশে-বিদেশে, আপনাদের বলব হুঁশিয়ার থাকবেন, সতর্ক থাকতে হবে। চোখ কান খোলা রাখতে হবে। তারা কী আন্দোলন করবে? তারা আন্দোলন করবে কী নিয়ে? এই পর্যন্ত ১৩ বছরে অন্তত ৫০ বার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। দেখতে দেখতে ১৩ বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর? বিএনপির আন্দোলনের ডাকে দেশের জনগণ সাড়া দেয়নি, দেবে না ‘
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।