স্টাফ রিপোর্টার : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানলে প্রধানমন্ত্রীর চা পান করব বলে জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তার কার্যালয়ে গেলে চা খাওয়াবেন। তার আগে বলে দেন, কেয়ারটেকার গভার্নমেন্ট সিস্টেম মেনে নিচ্ছি। তাহলে চা খাওয়া যাবে, অসুবিধা নেই।’ রবিবার অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অমানিশা: দুর্নীতি আর লুটপাটের খেসারত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এমন কথা বলেন ফখরুল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন আগে বলেছিলেন, ‘আমি তো বলে দিয়েছি, তারা যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করতে আসে, তাদের পুলিশ যেন বাধা না দেয়। বিশেষ করে বাংলামোটরে যে বাধা দেওয়া হয়, সেটা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছি। আসুক না হেঁটে হেঁটে যতদূর আসতে পারে। কোনো আপত্তি নেই। আমি বসাব, চা খাওয়াব। কথা বলতে চাইলে শুনব। কারণ, আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তবে যদি বোমাবাজি ও ভাঙচুর করে, বাধা দিব এবং উপযুক্ত জবাব পাবে। এটাই বাস্তবতা। কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কোনো বাধা নেই। সেটা তো করেই যাচ্ছে। ’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জবাবে এমন কথা বলেন ফখরুল।
ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের এই সরকার তাদের যে মাপের জুতা লাগে তার চেয়ে অনেক বেশি বড় জুতা পরতে চায়। ফলে তারা এখন হাঁটতে পারছে না, হোঁচট খেয়ে পড়ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, আনবিক শক্তির পাওয়ার প্ল্যান্ট—সব কিছু তারা করছে কিন্তু এর জ্বালানি তেল আসবে কোত্থেকে সেই চিন্তা তারা করেনি।’
সরকারের পদত্যাগ করার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে না। সরকার বড় বড় প্রকল্পের নামে লুট করছে। ১৫ বছরের সরকার শুধু একটা বিষয়ে নজর দিয়েছে তা হচ্ছে টাকা পাচার ও লুট। রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট হয়। প্রজা কষ্ট পায়। দেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা বানিয়ে দিচ্ছে অথচ দেশের বিভিন্ন জেলায় মানুষ দুই বেলা খেতে পাচ্ছে না। জ্বালানির ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা করেনি তাই এই সংকট দেখা দিয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘বোরো ধানের মৌসুম শুরু হয়েছে। গ্রামে সাত থেকে আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ যাচ্ছে। এতে ধান উৎপাদন কমে যাবে। খাদ্য সংকট হবে। কিছুদিন পর সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। সারের সংকট হবে। লোডশেডিং গ্রামে বেশি হয়। সেখানে ৬-৭ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হয়। শহরের মানুষদের খুশি রাখার জন্য শহরে লোডশেডিং কম হচ্ছে। কারণ, শহরের মানুষ একটু বেশি হৈচৈ করে, আন্দোলন করে। এজন্য শহরে কম লোডশেডিং হচ্ছে। শহরের মানুষদের খুশি রেখে গ্রামে যারা কৃষি কাজ করে, ফসল ফলান তাদের লোডশেডিং বেশি দিচ্ছে। ফলে কী হবে? ফসল উৎপাদন কমে যাবে। ধান উৎপাদন কমে যাবে। খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে চলে যাবে। এভাবেই পতন অনিবার্য হবে।’
মেগা প্রজেক্টের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মেগা দুর্নীতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মেগা প্রজেক্টে মেগা লুটের কারণে বাংলাদেশের আজ এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তাদের সাথে কথা বললে মনে হবে তারা একটা স্বর্গরাজ্য তৈরি করেছে এবং উন্নয়নের রোল মডেল। এখন রেমিট্যান্স কমে আসছে। চোখে সর্ষে ফুল দেখা শুরু করেছেন। যার জন্য এখন আবোল-তাবোল বলা শুরু করেছেন।’